লিবিয়ায় মানবপাচার ও মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূল হোতা বাদশা মিয়া (৪২) এবং তার সহযোগী আরজু বেগম (৩১) কে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তাদের দুজনের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার পাহাড়িয়া খালীতে।
শুক্রবার (২৮ জুন) সিআইডি সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মানবপাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে লিবিয়ায় অবস্থানরত গ্রেপ্তারকৃত আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অন্য চক্রের নিকট হস্তান্তর করে।
চক্রটি ভিকটিমদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। এরপর ভিকটিমদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ভিকটিম সাগরে মৃত্যুবরণ করেছে, কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ভিকটিম ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।
সিআইডি আরও জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে লিবিয়ায় যাওয়া মাগুরার বাসিন্দা নাছিরকে আটকে দেশে তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে নাছিরের পরিবারের করা মামলায় বাদশা ও আরজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ভুক্তভোগী নাছির গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। চার মাস আগে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাতস্থানে মানবপাচারকারী চক্র কর্তৃক আটক করা হয়। পরে দেশে তার পরিবারের কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট একাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। উক্ত একাউন্টে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ লাখ ২৮৫ টাকা তোলা হয়।
এ ঘটনায় কক্সবাজার থেকে বাদশা মিয়া ও আরজু বেগমকে গ্রেপ্তর করে সিআইডি। তারা আদালতে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং এ বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানান সিআইডি।
Discussion about this post