বরিশালের বানারীপাড়ায় মায়ের পরকীয়ার জেরে মেয়ে জান্নাতুল খানমের (১৩) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার উপজেলার আহম্মদাবাদ বেতাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে ওই এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী পাপন হাওলাদারের মেয়ে। নিহত জান্নাতুল সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের ধারালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা গেছে, ঘটনার দিন জান্নাতুল ঘুম থেকে জেগে মাকে খুঁজে না পেয়ে প্রতিবেশীদের জিজ্ঞেস করে। এ সময় প্রতিবেশীরা তার মায়ের পরকীয়ায় আসক্ত থাকার বিষয়ে কটাক্ষ করেন। পরে সেখান থেকে জান্নাতুল তার বাড়িতে ফিরে যায়। সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশীরা জান্নাতুলকে না দেখে তার ঘরে ডাকতে যান। এ সময় তারা জান্নাতুলকে ওই ঘরের বাথরুমে লোহার গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তারা জান্নাতুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জান্নাতুলের দাদা মো. ইউসুফ হাওলাদার জানান, পালক ছেলে পাপন হাওলাদারকে তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী ধারালিয়া গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. আবুল কালামের মেয়ে সান্তাকে তার ছেলে পাপনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি সন্তান হয়েছে। ছেলে সৌদি থাকার কারণে পুত্রবধূ অন্যের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার সালিশবৈঠক করেছেন। একপর্যায়ে সান্তার সঙ্গে তার ছেলের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে সান্তা তার ভুল বুঝতে পেরে মেয়ে জান্নাতুলের মাধ্যমে বিচ্ছেদ মিমাংসা হয়ে আবার বাবা-মা বিয়ের পীড়িতে বসেন। সৌদি প্রবাসী পাপন সম্প্রতি মোবাইল ফোনে স্ত্রী সান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন। এরপর থেকে সান্তা তার দুই সন্তান জান্নাতুল (১৩) ও ছেলে আবদুল্লাহকে (৮) নিয়ে ধারালিয়া গ্রামের মোক্তার বাড়িতে ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।
এদিকে স্কুলছাত্রী জান্নাতুলের মৃত্যুর রহস্য উদ্ধারের বিষয়ে থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
Discussion about this post