উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল এবং আমদানি নির্ভর দেশে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখে উন্নয়নের দোহাই দিলেও সর্বত্রই নৈরাজ্য। উন্নয়ন হলে দেশে কেন গ্যাস সংকট, বিদ্যুৎ সংকট।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায়শই একটি কথা বলে থাকেন, তা হলো জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত মানুষের ভোটের অধিকার।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সুতরাং জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বারো কোটি ভোটারের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে সক্রিয় রয়েছে। উন্নয়নের নামে দুর্নীতি আর দুর্বৃত্তায়নের হোতা আওয়ামী অলিগার্কদের কবল থেকে দেশ মুক্ত করে জনগণের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাক স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হারিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দুদিন আগে পত্রিকায় দেখেছি, ডামি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ উগান্ডায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে নাকি ভারতের সম্পর্ক গভীর থেকে আরও গভীর হয়েছে।’ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা আংশিক সত্য। সম্পর্ক গভীর হয়েছে, তবে সেটি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর করতে গিয়ে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের জনগণ হারিয়েছে গণতন্ত্র, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ভোটের অধিকার।
জামিনের কাগজ নিয়ে কারাফটক থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে আমাদের নেতাকর্মীদের। আওয়ামী পুলিশ প্রশাসন বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের জীবন নিয়ে খেলছে। জামিনে মুক্তি পেলেও জেলগেটে অপেক্ষমান গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের টাকা না দিলে তাদের মুক্তি মিলছে না। অসংখ্য গরীব নেতাকর্মী জেলগেটের টাকা না দেওয়ার কারণে কারাগারে ধুকে ধুকে জীবন কাটাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলেছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখন আওয়ামী সুরক্ষাবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আজ দেড় দশক ধরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ফ্রি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছ থেকে টাকা চুষে নেওয়ার জন্য। আমি মনে করি, গণতন্ত্র আদায়ে জনগণের অঙ্গীকার কখনোই নিষ্ফল হবে না।
জেআই/
Discussion about this post