সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুবলে গ্যাস বিক্রির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করার ফলে, ওই দেশগুলোর মুদ্রার ওপর মস্কোর আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে।
রাশিয়া থেকে গ্যাস কিনতে ডলার বা ইউরো নয়, রুশ মুদ্রা রুবলে পরিশোধ করতে হবে দাম। তবে এই শর্ত কেবল রাশিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া দেশগুলোর জন্য কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে মস্কো।
এর ফলে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া ইউরোপের দেশগুলো নতুন সংকটের মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল ইউরোপে হুহু করে বাড়তে শুরু করছে গ্যাসের দাম।
ওয়াশিংটন অবশ্য আগেই টের পেয়েছিল এমন কিছুর মুখোমুখি হতে পারে বিশ্ব। তাই ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের ভিন্ন উপায় খুঁজতে তোড়জোড় চালাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুবলে গ্যাস বিক্রির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করার ফলে, ওই দেশগুলোর মুদ্রার ওপর মস্কোর আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই রাশিয়া লেনদেনের ক্ষেত্রে ওইসব দেশের মুদ্রা নিষিদ্ধের পরিকল্পনা করছে।
পুতিন বলেন, ‘আমি অল্প সময়ে লেনদেনে পরিবর্তন আনতে কিছু ব্যবস্থা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মস্কোর বন্ধু নয় এমন দেশগুলোতে আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাস রুবলের বিনিময়ে সরবরাহ করা হবে। আমাদের পণ্য ইইউ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে ডলার বা ইউরোতে লেনদেনের কোনো মানে হয় না।’
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস রপ্তানি অব্যাহত থাকবে। কেবল বিনিময় মুদ্রা বদল হবে।’
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস রপ্তানি অব্যাহত থাকবে। কেবল বিনিময় মুদ্রা বদল হবে।’
এদিকে বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেগাওয়াট গ্যাসের দাম ৯৭ ইউরো থেকে বেড়ে ১০৮.৫ ইউরোতে পৌঁছায়। রুশ প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর তা আরও ১০ ইউরো বেড়ে যায়।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ তাদের মিত্র দেশগুলো মস্কোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, লেনদেনে ডলার এবং ইউরো সীমিত করেছে। বিদেশে রাশিয়ার ৩০০ বিলিয়ন ডলার জব্দ করা হয়েছে। যদিও রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি অব্যাহত রেখেছে এসব দেশ।
প্রায় দুই দশক আগে ডলারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পশ্চিমের তোপে পড়েন ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন এবং লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাদ্দামের কফিনে শেষ পেরেকটি ছিল আমেরিকান ডলারের পরিবর্তে ইরাকি তেল ইউরোতে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত। একইভাবে গাদ্দাফি স্বর্ণ বা ডলার ছাড়া অন্য যেকোনো মুদ্রায় তার দেশের তেল বিক্রিতে জোর দিয়ে প্রাণ খুইয়ে ছিলেন।
Discussion about this post