দক্ষিণ আফ্রিকায় সম্প্রতি অপহরণের শিকার হয়েছেন ব্যবসায়ী রেজাউল আমিন মোল্লা। তাকে অপহরণকারী দলের প্রধান শিহাব উদ্দিন ও সহযোগী আল আমিনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছেন প্রবাসীরা। শিহাব উদ্দিনের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী আর আল আমিনের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে।
রোববার (৯ জানুয়ারি) দেশটির ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের কুইন্স টাউন সংলগ্ন লেডিফ্রেরে এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টার সময় তাদের আটক করা হয়।
এর আগে, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর শিহাবের মামাতো ভাই সোলাইমান পূর্ব পরিচিত রেজাউল আমিন মোল্লা দোকানে বেড়ানোর নাম করে ওই দিন দুপুর ২টা থেকে অবস্থান করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সুযোগ বুঝে রেজাউলকে অপহরণ করে। এরপর বড় সাউন্ড বক্সে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে, নগ্ন করে, মুখে সোলোটেপ পেঁচিয়ে নির্যাতনের তিনটি ভিডিও দেশে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাংলাদেশে প্রশাসনের সহযোগিতার শিহাবের বাবা ও সোলাইমানের মাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত অপহৃত রেজাউল আমিন মোল্লার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর সোলাইমান গা ঢাকা দিয়েছে।
প্রবাসীরা বলেছেন, দেশটিতে বাংলাদেশিদের অপহরণ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। একদল টার্গেট ব্যক্তিকে তুলে এনে আটকে রাখছে। অন্য দল ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে বা দক্ষিণ আফ্রিকায় অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে মামলায় না হওয়ায় অপহরণ স্বাভাবিক ও নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। প্রবাসী অপহরণের ঘটনাও বেড়েছে।
গত দুই মাসে কেপটাউনে ১৫ জন প্রবাসী অপহৃত হওয়ার পর চাহিদামত মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও জোহান্সবাগ, ডারবান, পুমালাঙ্গা, ব্লুমফনটিনসহ দেশের ৯টির প্রদেশের সবকটিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, অপহরণকারীরা বাংলাদেশে তাদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা আদায় করছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অপহরণকারীদের এই সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে পারে।
Discussion about this post