ভূমধ্যসাগরের লিবীয় উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে কমপক্ষে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সোমবার (২৬ জুলাই) জাতিসংঘের এক অভিবাসন কর্মকর্তা একথা জানান।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম’র মুখপাত্র সাফা এমসেহলি জানিয়েছেন, অভিবাসীদের বহনকারী ওই নৌকা গত রোববার (২৫ জুলাই) লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর খুমস থেকে ছেড়ে যায়। নৌকাটিতে সেসময় কমপক্ষে ৭৫ জন ছিলেন।
এমসেহলি আরও জানিয়েছেন, নৌকাডুবির পর জীবিত ফিরে আসা নাইজেরিয়া, ঘানা ও জাম্বিয়ার অভিবাসীরা জানান- খুমস শহর থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে একপর্যায়ে নৌকাটি সমুদ্রে ডুবে যায়।
টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার এই মুখপাত্র বলেন, ‘নৌকাডুবির পর কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে সাগরে থাকা জেলে ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- ডুবে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন নারী এবং ২ জন শিশু রয়েছেন।’
এদিকে বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টার সময় সাগরে ডুবে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছে আইওএম। চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে নতুন এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এই তথ্য জানায়।
সংস্থাটি বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে ‘লিবিয়া থেকে ইতালি’ যাওয়ার পথটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এই পথে ডুবে মরেছে ৭৪১ জন। এরপর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপের পথ ছিল দ্বিতীয় প্রাণঘাতী; এই পথে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৫০ জন। এছাড়া পশ্চিম ভূমধ্যসাগরের স্পেনমুখী পথে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৪৯ জন এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরের গ্রিসের পথে প্রাণ গেছে ৬ জনের।
আইওএম বলেছে, অনেক জাহাজ ভেঙে ডুবে যাওয়ায় এবং শনাক্ত করতে না পারায় ইউরোপগামী ভূমধ্যসাগরের পথে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাটি বলেছে, চলতি মাসের প্রথম ছয় মাসে তিউনিশিয়ার উদ্ধার অভিযান গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ সাগর পথে ১৫ হাজারের বেশি পুরুষ, নারী ও শিশু উদ্ধারের পর ফেরত পাঠিয়েছে; যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন গুণ বেশি। এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশি নাগরিকও আছেন।
সূত্র: আলজাজিরা
Discussion about this post