চারদিনেও হদিস মেলেনি আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। রংপুর থেকে ঢাকা আসার পথে তিনি নিখোঁজ হন।
মাওলানা আদনানের নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানিয়ে রাজধানীর দারুসসালাম এবং মিরপুর থানায় গেলে কোন থানাই সাধারণ ডায়েরি বা মামলা গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করছেন তার পরিবার। এ নিয়ে সর্বশেষ রংপুর সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তবে ঢাকার পুলিশ বলছে, তিনি ঠিক কোন জায়গা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেই মামলা নেয়া হয়নি।
মাওলানা আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি বলেন, রাত ২টা ৩৭ মিনিটে তার (মি. আদনান) সাথে শেষ কথা হয়, তিনি তখন বলেছেন কাছাকাছি চলে আসছেন।
উনি তখন গাবতলী ছিলেন। এরপর রাত তিনটা থেকে তার ফোন বন্ধ পাই, এখনো পর্যন্ত নম্বর বন্ধই পাচ্ছি। তিনি বলেছেন, নিখোঁজ হবার সময় তার সাথে গাড়িচালকসহ আরো তিনজন সহকর্মী ছিলেন।
সেই তিনজন সহকর্মী এবং গাড়িটিরও কোন খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। মামলা না করার বিষয়ে সাবেকুন নাহার পাল্টা বলেন, কোথায় মামলা করবো, কার কাছে অভিযোগ করবো? মামলা করবো কী, কেউ তো জিডিই নিতে রাজি হচ্ছে না।
তিনি বলেছেন, স্বামীর নিখোঁজ হবার বিষয় নিয়ে শুক্রবার বিকেলেই পুলিশের শরণাপন্ন হন তারা। কিন্তু গাবতলী সংলগ্ন দারুসসালাম থানা কিংবা মিরপুর থানা কেউই মামলা গ্রহণ করেনি।
সাবেকুন নাহার অভিযোগ করেন, থানায় ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। কোন থানাই দায়িত্ব নিচ্ছে না, এক থানা আরেক থানাকে দেখিয়ে দিচ্ছে। তবে রোববার সকালে রংপুর সদর থানায় এ নিয়ে একটি জিডি করেছেন নিখোঁজ আদনানেন মা।
৩১ বছর বয়সী আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে ফেসবুক এবং ইউটিউবে অনেকেই তাকে অনুসরণ করেন। এই মুহূর্তে মাওলানা আদনানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়ে এবং তার সন্ধান চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোন সাধারণ ডায়েরি বা মামলা গ্রহণ করেননি তারা।
তিনি কারণ হিসেবে বলছেন, উনি (আদনান) কোথা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন সেই লোকেশনটা তো আমরা নিশ্চিত না। উনি গাবতলী থেকে নিখোঁজ হইছে, সেটা তো আমরা জানি না। সেক্ষেত্রে যেখান থেকে উনি রওনা হয়েছেন, সেই রংপুর অথবা উনার ঢাকায় যেখানে বাসা, সেখানে জিডি হতে পারে বা মামলা হতে পারে। এখন পুলিশ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, এজন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাহায্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গাবতলী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে মি. আদনানকে বা তার গাড়িকে দেখা যায়নি। বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তিকে অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের আলাদা কোন বিভাগ নেই।
Discussion about this post