মীর মাহফুজ আনাম, ওমান:
মৃত্যু সন্নিকটে জেনে হয়তো মায়ের কাছে ফিরেছিলেন ফটিকছড়ির ওমান প্রবাসী যুবক হালিম! গত ৩রা অক্টোবর মায়ের কাছে ফিরলেন। মাকে শেষবারের মতো দেখেই যেন মৃত্যুর ডাকে সাড়া দেবেন এমন প্রস্তুতিই ছিল বুঝি হালিমের। দেশে ফেরার মাত্র ৯ দিনের মাথায় মৃত্যুকুলে ঢলে পড়লেন হালিম। সোমবার রাত সাড়ে বারোটায় নিজগৃহে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন এই রেমিট্যান্সযোদ্ধা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
টগবগে যুবক নুর নবী হালিম (৩৫)। এমন সুঠাম দেহ দেখলে কারো বুঝার সাধ্য নেই যে, তার দু’টি কিডনীই নষ্ট। জীবিকার তাগিদে প্রবাসে এসে যখন মরণব্যধীর মুখোমুখি, তখনো দেশে ফেরাটা ছিল তার অনিশ্চিত। কারণ তার ভিসা জটিলতা ছিল। এক বছর পূর্বে প্রবাসে ডাক্তারে কাছে গিয়ে জানতে পারেন তার দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে, তবে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা কপালে জুটেনি তার ।
মৃত্যু যখন সন্নিকটে তখনই মায়ের কাছে ছুঁটে যাওয়ার ব্যকুলতা সৃষ্টি হয় তার মাঝে। সহযোগিতা চাইলেন ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের। তার জটিল রোগের কথা শুনে দূতালয়ের কর্মকর্তা মো.মাসুদ করিম তড়িগড়ি করে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিলেন।
নূর নবী হালিম ফটিকছড়ি পৌরসভার বারৈয়ারহাট সংলগ্ন নোয়াগাজির বাড়ির মৃত আহম্মদ হোসেনের তৃতীয় পুত্র। দীর্ঘদিন ওমানের হামরিয়াতে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত। শুধু হালিম নয়, ২০০৪ সালে তার ছোট ভাই এভাবে কিডনী নষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন। অল্প বয়সে দুইটি ছেলেকে এভাবে হারিয়ে বৃদ্ধা মা পাগলপ্রায়।
হালিমের ভাগিনা সম্পর্কের মঈন উদ্দিন বলেন,’ মামাকে দেশে আসলে বিয়ে করাবেন এমন স্বপ্নে বিভোর ছিলেন নানু। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেশে আসলেন ঠিকই, তবে বিয়ে করতে নয়; লাশ হয়ে কবরে যেতে।
Discussion about this post