মরণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মাঝে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে দফায় দফায় ফিরছে প্রবাসী কর্মীদের লাশ। পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে হৃদরোগসহ নানা কারণে অনেক কর্মীই মারা যাচ্ছেন। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে একাধিক বিশেষ ফ্লাইট যোগে ১৬ জন প্রবাসী কর্মীর লাশ ঢাকায় পৌঁছেছে। বিমানবন্দরে মৃত প্রবাসীদের লাশের কফিন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অপেক্ষমান স্বজনরা।
চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এবং ভিটেমাটি গবাদিপশু বিক্রি করে বিদেশে গিয়ে অনেক প্রবাসী কর্মীই অভিবাসন ব্যয়ের টাকাও তুলতে পারে নি। ঋণগ্রস্ত এসব অসহায় প্রবাসী পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আয় উপর্জনের একমাত্র ব্যক্তি বিদেশে গিয়ে মারা যাওয়ায় পরিবার পরিজনের মাঝে চলছে আহাজারি। বিদেশে মৃত কর্মীর লাশ এক নজর দেখার জন্য প্রতিবেশিরাও ছুটে যাচ্ছেন তাদের বাড়িতে। গত এক মাসে শুধু মালয়েশিয়া থেকেই ফিরেছে ৮৩ প্রবাসী কর্মীর লাশ।
বিমান বন্দরের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস মহামারীর মাঝেও বিশেষ ফ্লাইট যোগে সউদীসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে প্রতি সপ্তাহেই মৃত কর্মীদের লাশ আসছে। শুক্রবার রাতে কুয়েত থেকে যে সব মৃত কর্মীর লাশ দেশে পৌঁছেছে তারা হচ্ছে, ফেনীর নূর আলম, টাঙ্গাইলের মো. আনোয়ার হোসেন, কুমিল্লার আমির হোসেন, ঢাকার শেখ শামসুদ্দিন, সুনামগঞ্জের হাবিবুর রহমান, কুমিল্লার হারুন মিয়া, মাদারিপুরের শাহ আলম, গাজীপুরের আব্দুল হালিম, যশোরের নূর ইসলাম, সউদী আরব থেকে কিশোরগঞ্জের সোহরাব উদ্দিন, (সড়ক দুর্ঘটনায়) বগুড়ার রণি শেখ, টাঙ্গাইলের জামাল হোসেন, ওমান থেকে সুনামগঞ্জের তোরাব আলী, কাতার থেকে মুন্সিগঞ্জের মাসুদ শেখ, ঢাকার বাদল বাবু ও ময়মনসিংহের শরীফ।
প্রবাসে মৃত কর্মীদের লাশ পরিবহনের ভাড়া বাবদ এবং দাফন কাফনের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে কল্যাণ তহবিল থেকে প্রবাসে মৃত কর্মীদের পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে দেয়া হবে।
Discussion about this post