কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ি চৌরাস্তায় খাদ্যের দাবিতে গাছেরগুড়ি ফেলে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন ৪ শতাধিক নারী-পুরুষ। এ সময় রাস্তার দু’পাশে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য জানতে দুপুর ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সদরের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ময়নুল ইসলাম ও কাঁঠালবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল হক দুলাল ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কথোপকথনের এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা তাদের উপর চড়াও হন। পুলিশ তাদেরকে গাড়িতে করে সরিয়ে নিলে গাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। এতে ইউএনওর গাড়ির পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে কাঁঠালবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেদোয়ানুল হক দুলাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি দুষ্ট চক্র সরকারকে বিব্রত করতে এ বিক্ষোভ নাটক সাজিয়েছে। এর নেপথ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য মর্জিনা বেগম ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু জড়িত। ইউএনও এবং আমার ওপর হামলার নেতৃত্বদানকারী বাঁধন, আতাউর, দুলালসহ অন্যরা উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্যাডার।
তিনি বলেন, ইউএনওর উপস্থিতিতে আন্দোলনকারী মোটর শ্রমিক বিপ্লব ও চাঁদ এবং শ্রমজীবী সাবলু ও এনামুল স্বীকার করেন ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তারপরও কেন বিক্ষোভে অংশ নিল তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তারা।
পরিকল্পিতভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ইউএনওর সামনে প্রমাণিত হওয়ায় আন্দোলনকারী অপর একটি গ্রুপ আকস্মিকভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। অথচ কিছু সময় পরে উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আন্দোলকারীদের সঙ্গে তার সখ্যতা দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রকৃতপক্ষে ১ হাজার ৩৬১ জন দুস্থ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া যারা ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়ান না তেমন ৪শ’ প্যাকেট খাদ্য বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়েছে। রেশন কার্ড (প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ২০ কেজি চাল) দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৪৪১ জনকে। এর বাইরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের বিশেষ অর্থ সহায়তার আওতায় কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৪২ জনকে। এর বাইরেও কেউ বাদ পড়লে তাদেরকে বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সহযোগিতা করা হবে।
কুড়িগ্রাম সদরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম জানান, অবরোধের বিষয়টি জানার পর জনগণের সঙ্গে কথা বলতে গেলে আমার উপর চড়াও হয়ে গাড়িতে হামলা করে। এতে গাড়ির পেছনের গ্লাস ভেঙে যায়।
Discussion about this post