জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ২৪তম এশিয়ান আর্চারি। ৩০টি দেশের ২০৯ জন আর্চার অংশ নেবেন এই আসরে। এর একটি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি আর্চারিতে শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ নয়। যেমনটা দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত বা চাইনিজ তাইপে। এরপরও আলোচনায় আমিরাত। সেই কারণের পেছনে দলটির কোচ। আমিরাত আর্চার দলের কোচের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশের সাজ্জাদ হোসেন। ২০২১ সালে আমিরাত দলের কম্পাউন্ড ইভেন্টের কোচের দায়িত্ব পান তিনি। এবার নিজে দেশে তিনি এসেছেন বিদেশী কোচ পরিচয়ে।
আগে রিকার্ভ ইভেন্টে লড়তেন চাঁদপুরের ছেলে সাজ্জাদ। পরে কম্পাউন্ডে চলে আসেন। রিকার্ভ হলো ৭০ মিটার দূরত্বে তীর ছোঁড়া। আর কম্পাউন্ডে দূরত্ব ৫০ মিটার। এই রিকার্ভেই রেকর্ড গড়া স্বর্ণ তার। বাংলাদেশের আর্চারির ভাণ্ডারে এখন ৪০টির উপর আন্তর্জাতিক স্বর্ণ। আর এই সূচনটা হয়েছিল সাজ্জাদের হাত ধরেই।
ঘটনাটা ২০০৯ সালে। সেবার ভারতের কলকাতায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ এশিয়ান গ্র্যান্ড ফিক্সে রিকার্ভ এককে স্বর্ণ জয় করেন সাজ্জাদ। তিনি জানান, ‘আমি এই স্বর্ণ জয়ের মাধ্যমে রেকর্ডও করেছি। স্বাধীনতার পর এশিয়ান লেভেলে আমিই প্রথম স্বর্ণ জয় করি দেশের হয়ে। এরপর বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ পদক পায়।’ পরে তিনি এস এ গেমসে রৌপ্য পদক গলায় তোলেন।
২০১০ সালেই রিকার্ভ ছেড়ে কম্পাউন্ডে চলে যান সাজ্জাদ। ২০১২ সালের পর আর খেলা হয়নি। খেলা ছেড়ে কোচিংকে বেছে নেন পেশা হিসেবে। বাংলাদেশ আনসার, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কোচিং করানোর পর জাতীয় দলের কোচ। ২০১৬ সালের শিলং-গৌহাটি এস এ গেমসে বাংলাদেশ আর্চারি দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। এখন তিনি আমিরাত জাতীয় দলের আর্চারির কম্পাউন্ড ইভেন্টের কোচ। যদিও দেশটির রিকার্ভ বিভাগের কোরিয়ান কোচ।
আমিরাতের আর্চারি দলের সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় মোহাম্মদ জানান, আমরা এসেছি অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য।’
অবশ্য দলটি ওয়েস্ট এশিয়ান আর্চারিতে গত বছর ৮টি স্বর্ণ জিতেছিল। একই সংখ্যক স্বর্ণ জয় সৌদি আরবেরও। পশ্চিম এশিয়ায় তাদের সাথে পদকের লড়াই চলে সৌদি আরবের। সেই দলের কোচও বাংলাদেশী। তিনি জিয়াউল হক জিয়া। জিয়া অবশ্য বাংলাদেশে আসেননি। সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। সৌদি দলের কোচের দায়িত্বে অস্ট্রেলিয়ান রবার্ট। আমিরাতে বাংলাদেশের আরেকজন কোচ আছেন। তিনি কামরুল আলম। অবশ্য তিনি জাতীয় দলের নন, শারজাহর একটি ক্লাবের। যার হাত ধরে বাংলাদেশে আর্চারির স্বর্ণ জয়ের শুরু। পরবর্তীতে টানা দুই বার অলিম্পিক গেমসে সরাসরি কোয়ালিফাই করা। অতীতের চেয়ে এখন বাংলাদেশের আর্চাররা আরো বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। নতুন নতুন খেলোয়াড়ও উঠে আসছেন। সে কথাই উল্লেখ করলেন তিনি। এরপর আমিরাতে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, সেখানে কোচিংয়ের দারুণ পরিবেশ। সবাই সাফল্য পেতে সময় দিতে চায়।
এবারের আসরের অন্যতম ফেবারিট দক্ষিণ কোরিয়া তাদের সেরা দল নিয়ে আসেনি। এসেছে ‘বি’ দল নিয়ে। যদিও এই ‘বি’ দলে প্যারিস অলিম্পিক ও টোকিও অলিম্পিকে স্বর্ণজয়ী দু’জন নারী আর্চার আছেন। জানান দলের কোচ জেই হুন চুং। তিনি ১৯৯২ সালের বার্সেলোনা অলিম্পিকে রৌপ্যজয়ী খেলোয়াড়।






















