করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে লাশ পুড়িয়ে ফেলার যে বিশেষ আইন করার পরিকল্পনা করেছিল সরকার তা সংসদে পাস হয়নি।নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিতে শেষকৃত্যের পক্ষে বিলে মত দিয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট।
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল করোনা আক্রান্তদের লাশ পুড়িয়ে ফেলার। কারণ করোনা আক্রান্ত লাশের সারি বাড়তে থাকলে যুক্তরাজ্যে কবরের জায়গা সংকট দেখা দিবে এবং দাফনের ক্ষেত্রে মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাই করোনায় মৃতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হবে। এ ধরনের একটি বিলে সংশোধনী আনতে চেয়েছিল সরকার।
ব্রাডফোর্ডের এমপি নাজ শাহ এর বিরোধিতা করেন। সোমবার পার্লামেন্ট এই বিলটি সংশোধন হয়নি। ফলে আগের নিয়মেই ধর্মীয় রীতি মেনে চলবে দাফনের রীতি।
নাজ শাহ তার এক টুইট বার্তায় পার্লামেন্টের সকল এমপিদের এ জন্য ধন্যবাদ জানান।
বর্তমান “পাবলিক হেলথ ১৯৮৪ ধারা ৪৪ (৩)” আইনে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তাদের নিজ নিজ ধর্মমতে লাশ দাফনের অধিকার দেয়া আছে। ফলে স্থানীয় কাউন্সিল চাইলেই কারো মরদেহ জ্বালিয়ে ফেলতে পারে না। তাই পার্লামেন্ট চেয়েছিল এই আইনকে পরিবর্তন করতে। আইন পাস হয়ে গেলে ধর্মীয় নিয়মে লাশ দাফনের আর কোনো সুযোগ থাকতো না।
উল্লেখ্য, সোমবার পার্লামেন্টে উত্থাপিত হয় ‘ইমার্জেন্সি করোনা ভাইরাস বিল ২০১৯-২১’। প্রস্তাবিত বিলে ব্রিটেনের বিভিন্ন ধর্মমতের মানুষ যার যার ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মরদেহ দাফন কাফনের অধিকার হারাবেন এমন আশঙ্কা ছিল। কি পদ্ধতিতে লাশ দাফন হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার চলে যেত স্থানীয় কাউন্সিলের উপর। কাউন্সিল চাইলে ধর্মীয় রীতি মেনে লাশ দাফনের অনুমতি দেবে অথবা লাশ জ্বালিয়েও ফেলতে পারতো।
তবে মুসলমানদের লাশ জ্বালিয়ে ফেলার এমন প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে জোর ক্যাম্পেইন হয়েছে ব্রিটেনের মুসলিম কমিউনিটিতে। ব্রিটেনের প্রায় ৭ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ইসলাম ধর্ম পালন করেন।
একটি অনলাইন পিটিশনেও এই আইন পাস না করার পক্ষে স্বাক্ষর ছাড়িয়েছিলো প্রায় দুই লক্ষ। যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার আইন ১৯৯৮ অনুসারে মানুষের ধর্মীয় অধিকার উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।
Discussion about this post