ডাইনি অপবাদ দিয়ে এক লোধাশবর সম্প্রদায়ের বৃদ্ধার ওপর গরম লোহার রড নিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালাল উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের খুদমরাই অঞ্চলের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে।
সারা শরীরে গরম লোহার রডের ছ্যাঁকা আর মারধরের আঘাত নিয়ে সাঁকরাইলের ভাঙাগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি আছেন ওই বৃদ্ধা। অত্যাচারিত ওই বৃদ্ধার নাম চম্পা আড়ি। বাড়ি ওই থানার বাগমারি গ্রামে।
রবিবার (৮ মার্চ) বিকেলে ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটে। বৃদ্ধা একাই থাকেন বাড়িতে। লাগোয়া গ্রাম ভালুকিশোলে বসবাস করে বিজেপি–র খুদমরাই অঞ্চল কমিটির নেতা রবীন্দ্র হাঁসদা এবং তার পরিবার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেলে রবীন্দ্র ও তার দলবল চম্পাদেবীকে তাঁর বাড়ি থেকে টেনে–হিঁচড়ে পাশের গ্রাম ভালুকিশোলে রবীন্দ্রর বাড়িতে নিয়ে যায়। অভিযোগ, এরপর রবীন্দ্র–সহ ৫–৬ জন মিলে বৃদ্ধাকে প্রথমে প্রচণ্ড মারধর করে। এরপর চলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গরম রডের ছ্যাঁকা। গরম রডের ছ্যাঁকায় হাত, পা–সহ বিভিন্ন জায়গার চামড়া পুড়ে উঠে গেছে। অত্যাচার চালানোর পর ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ঘরে পৌঁছে দেয় অভিযুক্তরা। ব্যথা, যন্ত্রণা আর অপমানের জ্বালা নিয়ে নিজের ঘরে ডুকরে ডুকরে কাঁদেন চম্পা আড়ি।
এরপর কয়েকজন সিভিক পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে আসে। অত্যাচারিত মহিলাকে ভাঙাগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। বৃদ্ধার ছেলেও খবর পেয়ে ছুটে আসেন। এ প্রসঙ্গে সাঁকরাইল ব্লক যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘খুদমরাই অঞ্চলের বিজেপি নেতা রবীন্দ্র হাঁসদা লোধাশবর সম্প্রদায়ের মহিলা চম্পা আড়ির ওপর নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছে। বিজেপির মুখ আর মুখোশ ধরতে পেরেছে মানুষ। আমরা যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে এর নিন্দা জানাচ্ছি। প্রশাসনকে জানিয়েছি এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
জানা যায়, রবীন্দ্র ও দুজন মহিলা–সহ মোট ৬ জনের নামে সাঁকরাইল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তুলেছে। মূল অভিযুক্ত রবীন্দ্র পলাতক।
সূত্র: আজকাল
Discussion about this post