ইশতিয়াক আসিফ: চট্রমেট্রো নাম্বার প্লেটের বাংলাদেশী পতাকাবাহী বাইক নিয়ে ওমরা করতে বের হওয়া যুবক এখন আমিরাতে।
সৌদি আরবে উমরার উদ্দ্যেশ্যে বাইক চালিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশী মাসদাক চৌধুরী। আড়াই মাস পূর্বে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব ওমরার উদ্দ্যেশ্যে বের হওয়া চট্রগ্রামের হাটহাজারী থানার মোহাম্মদ মাসদাক চৌধুরী বর্তমানে আমিরাতে অবস্হান করছেন। তিনি বাইকে করে যাওয়ার সময় আশে-পাশের দেশগুলোতেও ভ্রমন করার লক্ষে ইন্ডিয়া, পাকিস্হান হয়ে আমিরাতে আসা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন এবং আমিরাত পর্যন্ত তিনি ১১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি জমিয়েছেন।
নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তাকে এ পথ একা পাড়ি জমাতে হচ্ছে শখের বসেই। তিনি জানান বাইক চালিয়ে বেড়ানোটা ২০১৫ সালে তার শখ জেগেছিল। সে সখের বসেই তিনি বাংলাদেশের ৬৪ টা জেলা ভ্রমন করেন মাত্র ৮ দিনে।
এরপর তার ইচ্ছা জাগে এবার দেশের বাইরে বাইক চালিয়ে ওমরা হজ্ব করা এবং সেই সাথে যেই দেশগুলো ওমরার পথে পড়বে সেগুলোতেও ঘুরে দেখবে। তিনি পাকিস্হানে এসে ফেনির এক বন্ধুকে সফরসঙ্গী হিসেবে পেলেও তিনি ব্যাক্তিগত সমস্যার কারণে চলে যায়।মাসদাক ইন্ডিয়াতে ৯ দিন,পাকিস্হানে ২ মাস এবং বর্তমানে আমিরাতের ৭ টা শহরে ভ্রমন করার পর সৌদিতে ওমরার উদ্দ্যেশ্যে বের হবেন। এমনকি তিনি সৌদিতেও রিয়াদ,মদিনা,মক্কা এবং জেদ্দা যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
যাত্রা পথে সমস্যার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, টায়ার এ জেল দিয়ে রাখলে টায়ার লিক হলেও বাতাস বের হয় না, তাই সবসময় টায়ারে জেল দিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু ইন্ডিয়া হয়ে আসার সময় টায়ার লিক হয়ে যায় এবং তখন টায়ারে জেল না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় চট্রগ্রামের যুবক মাসদাককে । পরে টায়ার এর দোকান কাছে থাকাতে সমস্যাটা সমাধান হয়েছিল।এবং বাংলাদেশ থেকে ভিজিট ভীসা থাকাতে ইন্ডিয়া’তে পাকিস্হানের ট্রানজিট ভীসা পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছিল, পরে তিনি দিল্লিতে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এপেয়ার্স থেকে পারমিশন নিয়ে বর্ডার ক্রস করার সুযোগ গ্রহন করতে পেরেছেন।এছাড়াও বাই রোডে বৃষ্টিতে,গরমে সমস্যা আবার পাকিস্হানে এসে মাইনাস ২৫ পর্যন্ত ঠান্ডায় এবং মরুভুমিতেও গাড়ি চালাতে হয়েছে। এরপর ইরানের ভিসা থাকলেও কিছু জঠিলতা থাকাতে ইরানে আসা সম্ভব হচ্ছিল না তাই পাকিস্হানের করাচি থেকে দুবাইয়ে কার্গোতে বাইক পাঠানো হয়েছে। এরপর আমিরাতে আসার পর বাইক চালাতে ইন্সুরেন্সের এবং বাইকের মূল্যের উপর ৫% ভ্যাট দিতে হয়েছে যেটা অন্য কোন দেশে দিতে হয় নি বলে জানান মাসদাক।
ভ্রমনে কিসে আনন্দ পেয়েছেন? জানতে চাইলে মাসদাক জানায়। প্রতিটা দেশে সাধারণ মানুষদের সাথে মেশার সুযোগ হয়েচে এতে করে সবার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা করতে পেরেছি। এছাড়াও প্রতিটি দেশে থাকা বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষদের সাথে মেশারও সুযোগ হয়েছে। তবে বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষদের খুব বেশী পাওয়া গিয়েছে আমিরাতে বলে জানান তিনি।
দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার খরচটা কিভাবে করছেন বহন করছেন? জানতে চাইলে তিনি জানান। সরকারি ভাবে কোন সাপোর্ট আশা করিনি কারন সরকার এই ব্যাপারে আমার জানা মতে সাপোর্ট দেয় না। তবে বেসরকারি ভাবে সাহায্য পেয়েছি রয়েল এন্টারপ্রাইজ, হেলমেট কোম্পানি এমটি বাংলাদেশ, আই পিক্সিড মোট তিনটা কোম্পানির সাপোর্ট পাওয়া গিয়েছে তবে তাও হ্যাল্প হয়েছে মোট বাজেট এর ২০ পারসেন্ট মতো বাকি খরচ নিজেরি উঠাতে হচ্ছে।
মাসদাক প্রতিটি দেশে শুধু যাওয়াটায় না তিনি আরো জানান দেশগুলোর প্রতিটি শহরে তিনি যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখন আমিরাত শেষে তার সৌদি ভ্রমন দিয়ে পবিত্র ওমরার মাধ্যমে তার এই ভ্রমনের সফলতা পাবেন বলে তিনি মনে করেন।
Discussion about this post