ইন্দোনেশিয়ান এক তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় চার বাংলাদেশিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দুবাই সুপ্রিমকর্টে মানবপাচারের অভিযোগ গঠন। সাতজনের মধ্যে চার বাংলাদেশি ছাড়াও দুইজন ইন্দোনেশিয়ান নারী ও একজন পাকিস্তানি পুরুষ রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুবাই’র একটি আদালতে এ বিষয়ে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ গঠন হয়। আদালতের শুনানিতে ৩০ বছর বয়সী ওই ইন্দোনেশিয়ান তরুণী জানান, একটি কোম্পানির মাধ্যমে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুবাই আসেন তিনি। শুরুতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। সে পরিবারে নির্যাতিত হলে একপর্যায়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে ফেসবুকে গৃহকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে সেখানে যোগাযোগ করলে স্বদেশি এক নারীর সঙ্গে কথা হয়। তাকে সেই নারী জানান, একটি আমিরাতি পরিবারে গৃহকর্মী দরকার। এজন্য পাকিস্তানি আসামির সঙ্গে তাকে কথা বলতে বলেন সেই নারী।
ওই তরুণী বলেন, স্বদেশির কথা মত আমি পাকিস্তানি লোকটির সঙ্গে কথা বলি। তখন কর্মস্থলের মালিককে দেখানোর জন্য আমার ছবি দিতে বলেন। ক’দিন পর পাকিস্তানি লোকটি আমাকে একটি বাগানবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে উপস্থিত অন্য আসামিরা জানায় যে, পাকিস্তানি লোকটি আমাকে বিক্রি করে দিয়েছে, সুতরাং আমাকে বাধ্যতামূলক যৌন কর্মী হিসেবে কাজ করতে হবে।
তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আসামিরা ওই বাগানবাড়িতে আমাকে তালাবাদ্ধ করে রেখে যায়। আমি সেখান থেকে পালানোর বহু চেষ্টা করেও পালাতে পারিনি। কদিন পর তারা আমাকে সিম কার্ড ছাড়া একটি মোবাইল ফোন দেয়। পরে আমি কোনোমতে ওয়াইফাই সংযোগ যুক্ত করে অনলাইনের মাধ্যমে দুবাইয়ে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত আমার বোনকে খবর দিই।
তরুণী জানান, তার বোন খবর পেয়ে দুবাই পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ সেই বাগান বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাকিস্তানি লোকটিকে ধরা হয়েছে। সে তরুণীকে বিক্রি করে দেয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তার কাছ থেকে বাকি ৬ আসামীর তথ্য সংগ্রহ করে গ্রেফতারের প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের বিরুদ্ধে মানবপাচার, পতিতালয় চালানো এবং তরুণীকে ঘরে আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ গঠন করা হয়েছে ।
Discussion about this post