প্রেম মানে না কোন জাত, কূল, ধর্ম বা ভৌগলিক সীমারেখা। প্রেমের অদৃশ্য আকর্ষণে প্রেমিকের খোঁজে সকল বাঁধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে থাংহন নামের এক তরুণী প্রেমিকা সুদূর চীন থেকে বাংলাদেশের নেত্রকোনার সীমান্তবর্ত্তী কলমাকান্দা উপজেলায় ছুটে আসেন। রোববার উপজেলার পোগলা ইউনয়নের গুতুরা গ্রামে খৃষ্টধর্মাবলম্বী চায়না কন্যা থাংহন ও মুসলিম বর জসীমের মধ্যে ইসলাম ধর্মানুযায়ী মহা ধুমধামের সাথে বিয়ে হয়ে গেল।
জসীমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জন্মসূত্রে চীনের নাগরিক থাংহন দুবাইয়ের একটি শপিংমলে তার খালার একটি ফার্মে চাকরি করতেন। একই ফার্মে জসীমেরও চাকরি হয়। আর সেখানে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রথমে ভাললাগা থেকে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মাঝে ছুটি কাটাতে প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়ই নিজ নিজ দেশে চলে যান। ছুটি শেষে তারা আবারো দুবাইয়ের কর্মস্থলে ফিরে যান।
গত দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেম চলে আসছিল। প্রেমের এই সম্পর্ক থাংহনের খালা ও বাবা-মা জানার পর প্রথমে মেনে না নিলেও মেয়ের অনঢ় সিদ্ধান্ত ও সুখের কথা চিন্তা করে অপারগ হয়ে শেষে তারা মেনে নেন। বাঁধভাঙ্গা এই প্রেম সোনালি ফ্রেমে সুখের বন্ধনে স্থায়ী করে রাখতে থাংহন ও জসীম বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
তারা বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দুবাই থেকে কেনাকাটা করে গত ঈদুল ফিতরের সপ্তাহখানেক আগে প্রেমিক-প্রেমিকা একসাথে দুবাইয়ের একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় অবতরণ করে গ্রামের বাড়ি কলমাকান্দায় চলে আসেন। তাদের আগমনের সংবাদ শোনে জসীমের বাবা-মা, ভাই, বোন, স্বজন ও এলাকাবাসী প্রেমিক-প্রেমিকাকে সাদরে বরণ করে নেন।
রোববার উপজেলার গুতুরা গ্রামের বাড়িতে ইসলাম ধর্মানুযায়ী থাংহন ও জসীমের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর আগে থাংহন খৃষ্টধর্ম ত্যাগ করে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার নাম রাখা হয় ইবনাত ময়িরম ফাইজা। অত্যন্ত জাকজমকের সাথে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে কয়েকশ’ অতিথিকে দাওয়াত করা হলেও অসংখ্য লোক ভিড় জমান।
প্রেমিক বর জসীম জানান, ‘নিজেকে এখন খুব সুখী মনে হচ্ছে। ফাইজা খুব ভাল মনের একজন মানুষ। সে বাব-মা, স্বজন ও দেশ ছেড়ে এই দেশে চলে আসবে তা আমি কখনও ভাবতে পারিনি। তার এই ত্যাগ অতুলনীয়। ফাইজার ইচ্ছানুযায়ী হানিমুনের জন্য আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে মাস খানেকের জন্য আমরা চীনে তার বাবা-মার’র বাড়িতে যাবো’।
ফাইজা বলেন, ‘হামার একন খুব্বই ভাল লাখচে। অ্যাই এম হ্যাপি’।
Discussion about this post