মহি উদ্দিন, ওমান: ওমানে ফ্রি ভিসায় আসা শ্রমিকদের ফের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহে ১০০০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গ্রেফতারদের অধিকাংশই বাংলাদেশি, তবে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে এ বিষয়ে কোনকিছু জানায়নি দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারী মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মাস্কাট সহ ওমানের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে এসব প্রবাসীদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৫৩২ জন ফ্রি ভিসার ‘ফ্রিল্যান্স কাজ’, স্পনসরদের থেকে পালিয়ে কাজ করার দায়ে ৩০৩ জন কে, এবং যথাযথ বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ওমানে থাকার অপরাধে ১৬৫ জন কে গ্রেফতার করা হয়। ওমান পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় অভিযান চালানো হচ্ছে মূলত শ্রম বাজার কে পরিষ্কার করার জন্য।’ সাপ্তাহিক তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে মোট ৪১০ কর্মী কে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বেশিরভাগ শ্রমিক গ্রেফতার হয়েছে ওমানে বসবাসের অনুমতি সহ শ্রম আইনের বিভিন্ন বিধান লঙ্ঘনের জন্য।
গ্রেফতার হওয়া ক্রমবর্ধমান সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্য করে সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এত গ্রেফতারের পরেও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক এখনও যথাযথ কাজের অনুমতি ছাড়া চাকরি করছে। ‘ছত্রভঙ্গের সময় ধরা পড়ে শতাধিক শ্রমিক, যারা স্পনসর এর অধীনে কাজ করছিলেন না। ফ্রি ভিসার ব্যপারে শ্রম আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন প্রবাসী শ্রমিক অথবা কর্মচারী যিনি ওমানের পরিচালক সম্পর্কিত কোনো লাইসেন্স ছাড়াই কাজ করেন অথবা নিয়োগকর্তা ব্যতীত যে কোনো নিয়োগকর্তার সঙ্গে সুলতানতে আনতে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অন্য কোনো নিয়োগকর্তার সঙ্গে কাজ করেন, তাকে শাস্তি দেয়া হবে।’
অর্থাৎ কেউ যদি কোনো ওমানির সঙ্গে চুক্তি করে ফ্রি ভিসা দিয়ে কোনো ব্যক্তি কে ওমান এনে অন্য কোথাও কাজ করায়, তাহলে এর জন্য এক মাসেরও অধিক কারাদণ্ড এবং ১০০০ ওমানি রিয়েল জরিমানা করা হবে।
তথাকথিত ‘ফ্রিল্যান্স’ ফ্রি ভিসার শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার কর্তৃক জারি করা ‘ফ্রি ভিসা’ নামে কিছুই নেই। ‘নিয়োগকর্তারা তাদের দেশে আনতে অনুমতি দেয়া ছাড়া অন্য একজন নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয় না। ২০০৯ সাল পর্যন্ত একজন শ্রমিক তার মালিক কে কমিশন দিয়ে অন্য জায়গায় কাজ করতে পারলেও এখন তা সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। কোম্পানি বা ব্যক্তি যারা অবৈধভাবে শ্রমিকদের ওমানে আনয়ন করে বা চাকরি প্রদান করে, তারা অবশ্যই বিদ্যমান আইনের অধীনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
Discussion about this post