আমিরাতে জুমা’র খুতবা: প্রতিবেশী সম্পর্কে আমাকে অসিয়ত করা হয়েছে

সমস্ত প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর জন্য, যিনি সর্বোত্তম ইহসানকারী ও মহানুভব। যিনি আমাদেরকে প্রতিবেশীদের প্রতি সদয় ও ইহসান করার অসিয়ত করেছেন।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

কুরআনের বাণী:

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়াদার ও ইহসানকারীদের সাথেই আছেন।”
— সূরা আন নাহাল: ১২৮

“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সাথে শির্ক করো না। মা-বাবা, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, আত্মীয় প্রতিবেশী ও অনাত্নীয় প্রতিবেশীদের প্রতি ইহসান করো।”
— সূরা আন নিসা: ৩৬

প্রতিবেশীর অধিকারের গুরুত্ব:

প্রিয় মুসল্লী ভাইয়েরা!
বংশ কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছাড়াও প্রতিবেশীদের প্রতি দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ। সুখে-দুঃখে সর্বপ্রথম যার পাশে পাওয়া যায়, সে প্রতিবেশীই।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:

“প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে প্রতিবেশীদের প্রতি দয়া করো।”
— সুনানে তিরমিজি: ২৩০৫

“আল্লাহর কসম, সে ব্যক্তি ঈমানদার নয়! … যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।”
— সহীহ বোখারী: ৬০১৬, মুসনাদে আহমদ: ৮৪৩২

“হযরত জিব্রাইল আঃ প্রতিবেশীদের হক্ব সম্পর্কে আমাকে এতই অসিয়ত করলেন যে, মনে হলো তারা আমার সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়ে যাবে।”
— মুসনাদে আহমদ: ৯৭৪৬

ইহসানের বিভিন্ন রূপ:

• এক টুকরো মুচকি হাসি মুসলিম ভাইয়ের প্রতি সদকা স্বরূপ। (সহীহ ইবনে হিব্বান: ৬৯৫)

• সাধ্যানুযায়ী প্রতিবেশীকে উপহার প্রদান করো; এতে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। (আল আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪)

• উত্তম প্রতিবেশী পাওয়া মানব জীবনের সৌভাগ্যের অন্যতম। (সহীহ ইবনে হিব্বান: ৯/৩৪১)

• আত্মীয়তার সম্পর্ক, উত্তম চরিত্র ও প্রতিবেশীর প্রতি সদ্ব্যবহার বরকতময় হায়াতের মাধ্যম। (মুসনাদে আহমদ: ২৬০০১)

• যে ব্যক্তি প্রতিবেশীর কাছে উত্তম, সে ব্যক্তি আল্লাহর কাছেও উত্তম। (সুনানে তিরমিজি: ১৯৪৪)

প্রতিবেশীর সাক্ষ্যের গুরুত্ব:

“যে কোনো মুসলিমের মৃত্যুতে যদি তার প্রতিবেশীর ৪ জন উত্তম বলে সাক্ষ্য প্রদান করে, তখন আল্লাহ বলেন — তোমরা যা সাক্ষ্য দিয়েছো, তা কবুল করলাম এবং যা জানো না তাও মাফ করে দিলাম।”
— সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩০২৬

আল্লাহর ভালোবাসা লাভের উপায়:

“তোমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসা পেতে চাও, তবে প্রতিবেশীদের সাথে ইহসান করো।”
— তাবরানী: ৬৫১৭

বিশেষ সরকারী নির্দেশনা:

প্রিয় মুসল্লী ভাইয়েরা,
বর্তমানে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তাই ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকদের জন্য দুপুর ১২:৩০ থেকে ৩:০০ পর্যন্ত কাজের বিরতি থাকবে। সবাই সরকারী নির্দেশনা মেনে চলবেন।
যে ব্যক্তি রহম করেনা, তার উপরও রহম করা হয় না।

দোআ:

ইয়া আল্লাহ!

• আমাদের উত্তম প্রতিবেশী দান করুন।

• প্রতিবেশীদের হক আদায়ের তাওফিক দিন।

• আমাদের মা-বাবাকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন।
  আমীন।