ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বক্তব্য দেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নুর বলেন, ‘স্যার (কলিমুল্লাহ) একটু বাড়িয়ে বলছেন, যা বিভ্রান্তি তৈরি করবে। আমি বাইরে গেলে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়, হতেই পারে।’ঘটনার প্রায় দুই বছর পরে মেন্দি সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘এক কফিশপে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলাম। কফি-টফি, মিটিং-টিটিং কিছুই হয়নি। আমি তখন অনেক বিড়ম্বনায় ছিলাম, অনেক ধকল সহ্য করতে হয়েছে।’
এর আগে অধ্যাপক কলিমুল্লাহ বলেন, ‘ইসরায়েলের কোনো নাগরিকের সঙ্গে কেউ কথা বললে তাকেও বিপদে পড়তে হয়। আমাদের এখানে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর আছেন। তিনি হাসিনার আমলে মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণ করছিলেন, তখন মেন্দি সাফাদির সঙ্গে কফি মিটিং করছিলেন বলে নানান ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। আই হ্যাড টু রেসকিউ হিম। আমি অনলাইনে তার সঙ্গে শো করেছিলাম।’তিনি আরও বলেন, ‘মেন্দি সাফাদি ইহুদি নন, তিনি একজন দ্রুজ মুসলিম। একজন মুসলমান যদি আরেকজন মুসলমানের সঙ্গে কফি খান, তাহলে কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে? এই ট্যাবুগুলো ভাঙার জন্য কথাবার্তা দরকার।’ তবে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জিল্লুর রহমান পরে সংশোধন করে বলেন, ‘দ্রুজ আসলে মুসলিম নয়, এটি একটি আলাদা ধর্ম।’
এর আগে ইসরায়েলের বিষয়ে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মুশতাক আহমেদই প্রথম ‘সবার প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি শত্রুতা নয়’ নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, ‘খন্দকার মুশতাক যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন, তখন সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের নির্দেশে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল ইসরায়েল সেই চিঠির উত্তর দেয় এবং স্বীকৃতি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে সেসময় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার যে ভারতের আশ্রয়ে ছিল, সেই ভারতীয় প্রতিবন্ধকতার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি।’
Discussion about this post