সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল-খাইমাতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এক নারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ছেলেরা। পরকীয় প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাবাকে হত্যা করেছিলেন এ নারী। তবে মায়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে সেটি মানতে না পেরে বাবাকে হত্যার পরও মাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তারা।সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ মঙ্গলবার (৩ মে) জানিয়েছে, আর. এ নামে ওই নারী তার পরকীয়া প্রেমিক মিলে তার স্বামীকে হত্যা করেন। এরপর গাড়ির চালকের সহায়তায় তারা মরদেহ একটি উপত্যকায় ফেলে আসেন। ওই নারী ও তার পরকীয় প্রেমিক আরব আমিরাতের নাগরিক। অপরদিকে তাদের গাড়িচালক পাকিস্তানি। সন্তানরা ক্ষমা করে দেওয়ায় ওই নারী মুক্তি পেলেও তার পরকীয় প্রেমিক এবং গাড়ি চালকের মৃত্যুদণ্ড এখনো বহাল আছে।
কীভাবে ঘটেছিল সেই হত্যাকাণ্ড
রাস আল খাইমার সংশোধনাগার (কারাগার) কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। তখন ওই নারী একটি স্কুলে কাজ করতেন। ওই সময় তিনি পরকীয় প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তাদের প্রেম এতটাই গভীরে পৌঁছায় যে তিনি তার ৫৪ বছর বয়সী স্বামীকে হত্যা করে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সংসার শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।
এর অংশ হিসেবে তিনি তার স্বামীর শরীরে ডায়বেটিসের ইনসুলিন বেশি মাত্রায় প্রয়োগ করেন। কিন্তু এতেও কাজ হয়নি। এরপর তাকে চেতনাশক খাওয়ান। তখন নারীর পরকীয় প্রেমিক সেখানে আসেন। হত্যাকারী নারী ভেবেছিলেন তার স্বামী হয়ত মারা গেছে। কিন্তু তখনও তিনি বেঁচে ছিলেন। এটি দেখতে পেয়ে তার পরকীয় প্রেমিক তার স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। তখন তারা মরদেহ লুকাতে তাদের পাকিস্তানি গাড়িচালককে ডাকেন এবং ১০ হাজার দিরহামের লোভ দেখান। তিনি লোভে পড়ে মরদেহটি ফেলে দিতে রাজি হন। তখন ওই নারীর পরকীয় প্রেমিক ও গাড়িচালক মিলে একটি উপত্যকায় ওই ব্যক্তির মরদেহ ফেলে দিয়ে আসেন। পরেরদিন এক মেষপালক মরদেহ দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানায়। এরপর তদন্ত শেষে ওই নারী, তার প্রেমিক ও গাড়িচালককে গ্রেপ্তার করা হয়।যাদের সবাইকে পরবর্তীতে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। তবে সন্তানদের কল্যাণে এ নারী বেঁচে গেলেও ওই দুইজনকে যে কোনো সময় ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হবে।
এদিকে আমিরাতে রক্তের সম্পর্কের কেউ হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিলে তিনি ক্ষমা পান। যেহেতু ওই ব্যক্তির রক্তের সম্পর্ক হলো তার ছেলেরা। তাই তারা ক্ষমা করায় তাদের হত্যাকারী মা মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে গেছেন। তিনি ইতিমধ্যে কারাগার থেকে বেরও হয়ে গেছেন।
সূত্র: গালফ নিউজ
Discussion about this post