পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলের ১৫ বছরে দেশের পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করার সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। স্বৈরাচারের অবৈধ, অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী ব্যাপকভাবে জনরোষের মুখে পড়ে। অনেক সৎ পুলিশ সদস্যদেরও এজন্য মাশুল দিতে হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৫ মার্চ কালরাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাসে এটা গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। আজকের দিনে আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
তিনি বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয় সেসময় এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। পুলিশের সাথে জনগণের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সরকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবরকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ নিরসন, বিশেষ অভিযান পরিচালনা, অংশীজনের সঙ্গে পুলিশের আন্তঃযোগাযোগ জোরদার করা, পুলিশ সদস্যদের মনোবল বাড়াতে প্রয়োজনীয় প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের অধিকার, মর্যাদা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, কোনো বৈষম্য থাকবে না- যুগ যুগ ধরে এটাই দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ আকাঙ্ক্ষা পূরণে জোর ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গাপূজা, বিশ্ব ইজতেমা, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। দেশে যতগুলো অপরাধ হচ্ছে সবগুলো ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এজন্য তিনি পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
Discussion about this post