কাতারের কাছে রেখে যাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সকল ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। কাতার সফরে থাকা অবস্থাতেই এসব ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই। সফরের শেষ দিনে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। অসহায় গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে কাতারকে অনুরোধ করেন তিনি। কাতার সফরে দুই দেশের এলএনজি সেক্টরে বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে জানা প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরের তৃতীয় দিন ছিল আজ (বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল)। দেশটির স্থানীয় সকাল ৯টায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তরুণদের ‘থ্রি জিরো’ হতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ‘তরুণদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যা সম্পদ কেন্দ্রীকরণে অবদান রাখে।’
আত্মবিধ্বংসী সভ্যতা থেকে বেরিয়ে এসে একটি নতুন পৃথিবী তৈরির স্বপ্ন দেখতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এরপর কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দেল রহমান জসিম আল থানির সাথে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ জানান ড মুহাম্মদ ইউনূস। এই সংকটে অসহায় গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে কাতারকে অনুরোধ করেন তিনি।
কাতার সরকারের থেকে কেনা এলএনজি কেনার পর ২৫৪ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রেখেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার।প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলতি সফরের মধ্যেই (গতকাল, ২৩ এপ্রিল) সেই বকেয়ার শেষ অংশ পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান। প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কাতার থেকে এলএনজি কিনলেও পুরো অর্থ পরিশোধ করেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ধাপে ধাপে ওই অর্থ পরিশোধ করেছে। সর্বশেষ বুধবার সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধের মাধ্যমে এখন কাতারের কাছে আর কোনো দেনা নেই।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘গাজা ক্রাইসিস নিয়ে কথা হয়েছে। গাজার সমস্যা দ্রুত সমাধান হয়ে যায় সেই বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘কাতারের এই সফরের বহুমাত্রিক দিক রয়েছে। এলএনজি সেক্টরে বাংলাদেশ কাতার বাণিজ্য বিনিময়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।’
সিরিজ বৈঠক শেষ করে দোহার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কাতারে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাথে মিলিত হন তিনি। শুনেন তাদের সুখদু:খের কথা।
এখানেই তিনি জানান, সফরে থাকা অবস্থাতেই কাতারের কাছে রেখে যাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সকল ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। তাই প্রবাসীদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে আশাবাদী তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘খুশিতে দেশে প্রবেশ করতে পারেন সেইটা যেন অনুভব করতে পারেন। সেইজন্য আমরা বলেছি প্রবাসীদের ভিআইপি গেস্ট হিসেবে দেখার জন্য।’
প্রবাসীদের নানা অভিজ্ঞতা এবং বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
Discussion about this post