ফ্যাসিবাদী সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে তিস্তা চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শক্ত কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে তিস্তা মহাপরিকল্পনায় কি থাকবে আর কি থাকবে না তা তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের ওপর নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন আরেক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।
এর আগে, রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু-সংলগ্ন তিস্তার পূর্ব পাড়ে ব্যানার, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড হাতে আসে দুই তীরে বসবাসকারী হাজার হাজার বাসিন্দা। বিকেলে পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া।
এ সময় তিস্তা নিয়ে সীমাহীন সঙ্কট ও সমস্যার কথা তুলে ধরে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, বন্যা, খরা, ভাঙনসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে জীবন যুদ্ধে টিকে আছেন কোটি মানুষ। দাবি তোলেন, দ্রুত তিস্তা চুক্তি, সংস্কার ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।
গণশুনানি শেষে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে তিস্তা চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। তারা শুধু ভারতে গিয়ে ছবি তুলেছে। পানি নিয়ে নিজেদের ন্যায্য কথাটা বলার সাহস পর্যন্ত পায়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কূটনৈতিকভাবে ভারতকে চাপ সৃষ্টি করবে যাতে তারা বাধ্য হয় এই চুক্তি স্বাক্ষর করতে। নিজেদের অধিকার পরিপূর্ণভাবেই আদায় করব আমরা।’
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আপাতত তিস্তার ৪৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে মহাপরিকল্পনা নির্ভর করবে, তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের চাওয়া পাওয়ার ওপর।’
তিনি বলেন, ‘কোনো দেশ যদি মনে করে আমার দেশে যেটুকু তিস্তা আছে সেটুকু আমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করব এটা আন্তর্জাতিক কোনো নীতির মধ্যে পড়ে না। তারা যখনই গেট খুলে দেবে কিংবা বন্ধ করবে আমাদের জানানো উচিত। যদি না জানায় তাহলে ভারত আমাদের কেমন ভালো বন্ধু আর প্রতিবেশী?’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের পর ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার ও বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে মহাদুর্যোগ তৈরি করলে, নদী পাড়ের বাসিন্দারা আন্দোলন গড়ে তোলেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।
Discussion about this post