‘গুলি করি, মরে একটা। একটাই যায় স্যার। বাকিডি যায় না।’ ফেসবুকও সয়লাব এমন বক্তব্য দেয়া ছাত্র-জনতাকে হত্যার সাথে জড়িত ডিএমপির সাবেক ডিসি (এসপি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন এখনও অধরা। আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তা ইকবার ছয় মাসেও গ্রেফতার না হওয়ায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারন মানুষের দাবি কোটা সংস্কারের ছাত্র
আন্দোলন ঘিরে মানুষ মেরে ফেলার মতো কঠিন কাজ করেও বাক্যগুলো যিনি অবলীলায় বলেছেন, সেই ডিএমপি ওয়ারী বিভাগের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনকে গ্রেফতার করে দ্রত আইনের আওতায় এনে বিচার করা প্রয়োজন।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসপি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের মতো ভয়ংকর খুনীরা সংখ্যা পুলিশ বাহিনীতে কম নয়। যারা এখন পলাতক। এসব পলাতক খুনীরা এখনও অধরা থাকায় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেফতার অভিযান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দফতরের সঠিক মনিটরিং ও দিক নির্দেশনা না থাকায় রাজধানীসহ সারাদেশে অপরাধী এবং জুলাই-আগস্টআন্দোলনে ছাত্র-জনতার খুনের সাথে জড়িতরা গ্রেফতার হচ্ছে না। ইকবালের ব্যাচমেট ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইনকিলাবকে বলেন, আন্দোলন দমনে ডিএমপির যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ‘অতি বল প্রয়োগ’ করেছেন, তাদের অন্যতম ইকবাল। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন না হলে তিনি হয়ে উঠতেন আরও ক্ষমতাধর। ৫ আগস্টের ঘটনায় ইকবালকে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্তকরা হয়। এর পর থেকে তার কোন হদিস নেই। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে কোন উদ্যোগ নেই বর্তমান পুলিশ প্রশাসনের।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলির ঘটনায় মামলা হলেও মামলার আসামিদের অধিকাংশ দেশে থাকলেও তারা ধরাছোয়ার বাইরে। সূত্র জানায়, ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর একটি ভিডিও দেখিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ওপরের কথাগুলো বলেছিলেন কিলার ইকবাল। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে আগ্রহ নিয়ে এটি দেখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাংগীর আলম ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ইকবালকে বলতে শোনা যায়, ‘গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করলে মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।’ মোবাইল ফোনে থাকা ভিডিওতে লাশ দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই যে ডেডবডিটা নামাইছি স্যার। কোমরে বেল্ট আর নিচে প্যান্ট ছিল।’ মানুষ হত্যার ঘটনার বর্ণনার সময়ও ইকবালের চেহারায় বিন্দুমাত্র অস্বস্তি দেখা যায়নি। অঙ্গভঙ্গিও ছিল যেন জীবজন্তু শিকার করছেন!
Discussion about this post