“পীর মুরিদি আমাদের কাজ নয়, আমাদের কাজ হলো আল্লাহ সন্ধানী মানুষদের আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া” এই মহান প্রতিপাদ্যকে বাস্তবায়ন করে ইতিহাসের বুকে স্মরণীয় বরণীয় হয়ে আছেন খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রা.)। শরীয়তকে পরিপূর্ণ অনুশীলন এবং প্রিয় রাসূল (দ.) এর মুহাব্বত ও অনুসরণের মাধ্যমে হযরত গাউছুল আজম (রা.) অলৌকিকভাবে বায়াতে রাসূল (দ.) এর মধ্য দিয়ে খলিফায়ে রাসূল (দ.) এর আলিশান মর্যাদা অর্জন করেছেন, মাশাআল্লাহ। যে পথ ধরে হযরত গাউছুল আজম (রা.) আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছেছেন সেই মহান পথের সন্ধান পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত। যে তরিক্বতে রয়েছে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, তাওয়াজ্জুহ এর মাধ্যমে প্রিয় রাসূল (দ.) এর বাতেনি নূর ক্বলবে গ্রহণ, ফয়েজে কুরআন, মোরাকাবা, তাহাজ্জুদ, জিকিরে জলী ও জিকিরে খফির ব্যবস্থাপনা। এই মহান তরিক্বতে মুহাব্বতের নিয়তে দৈনিক ১১১১ বার দরূদ শরীফ পড়তে হয়, কখনো ক্বাজা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদায় করে দিতে হয়। দরূদ শরীফ এর ক্বাজা আদায়ের এমন নজির পৃথিবীতেই বিরল। খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রা.) নিজে যেমন এই সমস্ত আমল করেছেন স্বীয় অনুসারীদেরকেও সেই মতে তালিম দিয়েছেন। পবিত্র মেরাজুন্নবী (দ.) এর বরকতময় সময়ে এই মহান মনীষীর বেছাল শরীফ। যাঁর স্মরণে অনুষ্ঠিত সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম (রা.)। যেখানে নেই শরীয়তের বিন্দু পরিমাণ লঙ্ঘন, সুন্নাতের কমতি। এই মহান ওরছে পাকে ছিল না গরু-ছাগল-মহিষ, নজর-নেওয়াজ কোন কিছুই আনার অনুমতি, মহিলাদেরও ছিল না এই ওরছে পাকে আসার অনুমতি। মহিলাদের জন্য ছিল ঘরে বসে খতমে কুরআন আদায়, নফল রোজা রাখার মাধ্যমে ওরছে পাকের বরকত হাসিল করার সুযোগ। হযরত গাউছুল আজম (রা.) সমস্ত জীবন শরীয়ত ও সুন্নাতের আলোকে জীবনযাপন করেছেন। এরই আলোকে তাঁর ওরছে পাকে যেমন শরীয়ত ও সুন্নাত বিরোধী কিছু ছিল না অনুরূপভাবে তাঁর রওজা পাকেও নেই শরীয়ত ও সুন্নাত বিরোধী কোন কার্যক্রম, নেই কোন দানবাক্স, সিজদা করার অনুমতি কিংবা মোমবাতি প্রজ্বলনের সংস্কৃতি। শেষ যুগে এসে এই মহান মনীষীর তরিক্বত উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য বিশাল এক নিয়ামতের বিষয়, যার সংস্পর্শে এসে পথহারা মানুষ খুঁজে পায় আল্লাহ ও রাসূল (দ.) এর সন্ধান। যে তরিক্বতের পথ পরিক্রমায় মানুষ পৌঁছে যায় মঞ্জিলে মকছুদের ঐশী সোপানে, সুবহানআল্লাহ।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিন-রাতব্যাপী চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.), হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর স্মরণে ৭২তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) উদযাপন ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে এ মহামনীষীর একমাত্র খলিফা, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়ক ছৈয়্যদ মাননীয় মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালানা ওরছে পাকে বক্তব্য রাখেন মুফতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, চবি গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জালাল আহমেদ, সংগঠনের কানাডা শাখার সভাপতি মীর বদিউজ্জামান,আলহাজ্ব মীর কায়কোবাদ, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন ও মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানি ফয়সাল।
মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
Discussion about this post