সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে পবিত্র রমজানে ওমরাহর বিমান টিকিট। এক লাফে বিমানের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এয়ারলাইন্সগুলোর অতি মুনাফার খারাপ পলিসির শিকার হচ্ছেন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আর এয়ারলাইন্সগুলোর দাবি, চাহিদা অনুযায়ী বিমান পরিচালনার সুযোগ না থাকায় দাম বাড়িয়েছে তারা।
আগামী মার্চে পবিত্র রমজান মাস। প্রতি বছর রমজানে ওমরাহর চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষ করে রমজানের শেষ ১০ দিনে পবিত্র কাবায় ইতেকাফ করে থাকেন অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান। কিন্তু অনেকেরই এবার সে আশা গুড়ে বালিতে রূপান্তরিত হতে পারে। কারণ রমজান মাস আসার আগেই বিমান টিকিটের দাম আকাশচুম্বী। সাধারণ এজেন্সি মালিকরা আগামী মার্চের টিকিট কিনতে গেলেই বিমান থেকে বলা হচ্ছে সোলডআউট। কিন্তু সিন্ডিকেটের মাফিয়া ট্র্যাভেল এজেন্টরা এজেন্সিগুলোকে মেসেজ করে জানাচ্ছে, তাদের কাছে টিকিট রয়েছে। তবে এ টিকিট কিনতে গুনতে হবে দ্বিগুণ টাকা।
জানা যায়, গত নভেম্বর মাসে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম ছিল জনপ্রতি ৭৫ হাজার টাকা। ডিসেম্বর পাঁচ হাজার টাকা দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ হাজার টাকা। জানুয়ারি মাসের টিকিট বিক্রি হয় ৮৫ হাজার টাকা। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৯৫ হাজার টাকা। আর মার্চ মাসের টিকিট পাওয়ায় যেন দুষ্কর। ১ মার্চ থেকে রমজান শুরু হতে পারে। এ জন্য ওমরাহ করতে ইচ্ছুক ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কেবল খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছেন। আর তাতেই দাম বেড়ে গেছে। এক লাখ ১০-২০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। সামনে এ দাম আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সাধারণ ট্র্যাভেল এজেন্সি মালিকরা। এ ছাড়া ট্রানজিট নেয়া এয়ারলাইন্সের বিমান ভাড়াও বেড়েছে। নভেম্বরে যে ভাড়া ৬০ হাজার টাকা ছিল, মার্চের সেই ভাড়া রাখা হচ্ছে ৯৫ হাজার টাকা। মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া শ্রমিকরাও পড়েছেন বিপাকে। তারা এত দিন ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিমান টিকিট পেলেও তাদেরও রমজানের সময়ের টিকিট কিনতে হচ্ছে ৬৫ হাজার টাকায়।
বেসরকারি হজ ও ওমরাহ এজেন্সি মালিকরা জানিয়েছেন, এয়ারলাইন্সগুলো আমাদের জিম্মি করে ফেলেছে। রমজানে যারা ওমরাহ করতে যাবেন তারাই এখনো আসেননি। কিন্তু চাহিদা বাড়তে পারে এ সম্ভবনা থেকে আগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। আর এ সুযোগে কিছু ধনী এজেন্সি সিন্ডিকেট করে এয়ারলাইন্সগুলো থেকে আগেভাগেই ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কিছু বেশি দামে টিকিট কিনে জমা করে রাখছে। এ কারণে সাধারণ ওমরাহর জন্য সাধারণ ট্র্যাভেল এজেন্সি মালিকরা এয়ালাইন্সগুলোর কাছ থেকে সরাসরি টিকিট চেয়েও পাচ্ছে না। ফলে তাদেরকে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বেশি দামে টিকিট কিনতে হচ্ছে। এসব সিন্ডিকেট টিকিট প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ করছে। আর এয়ারলাইন্স ও সিন্ডিকেটের লোভের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ট্র্যাভেল ও ওমরাহ এজেন্সি মালিকরা। তারা আশঙ্কা করছেন, রমজানে ওমরাহর সময় এমনিতেই সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যায়। তার উপর বিমানের ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ার কারণে এবার মোট খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এবার ওমরাহ করতে কমবেশি দুই লাখ ২০ হাজার থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে।
Discussion about this post