ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি বেতন কাঠামো তৈরি করছে। যার কাজ চলমান রয়েছে। কাজ শেষে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে গেজেট করা হবে। আর এটি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ইমামদের জন্য কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি বরিশাল কেন্দ্রে প্রশিক্ষণরত ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যেসব মসজিদ বেসরকারিভাবে পরিচালিত তাদেরও আমরা উদ্বুদ্ধ করব। পাশাপাশি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মসজিদের কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা প্রস্তাব রেখেছি। একইসঙ্গে তাদের জন্য উৎসব ভাতা দেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছি। আশা করি এতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জীবন মান উন্নত হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, উৎসাহ-উদ্দীপনা সাধিত হয় এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা আমরা অর্জন করতে পারি। যেসব ইমাম-মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অথবা নিচ্ছেন তারা ইমামতির পাশাপাশি যাতে ছোট ব্যবসা (কুটির শিল্প, মৎস চাষ, খেত-খামার, কবুতর পালন অথবা কোয়েল পাখি পালন) করে স্বাবলম্বী হতে পারেন; এ জন্য বিনা সুদে আমরা তাদের ঋণ দিচ্ছি। অর্থাৎ আপনি সামান্য পুঁজি নেবেন, আমরা সামান্য পুঁজি দেব, ইমামতির পাশাপাশি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হবেন, এতে লজ্জার কিছু নেই।
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করব। সেখান থেকে মিনারেল ওয়াটার তৈরি করে বাজারে সাপ্লাই দেব, যা লাভ হবে সেটা ইমাম মুয়াজ্জিনদের কল্যাণ ট্রাস্টে যাবে। আমাদের সময় কম হলেও আমরা শুরু করতে চাই, আর কারও কাছে আমাদের টাকাও চাইতে হবে না। আমরা প্রাথমিকভাবে নিয়ত করেছি পানির বোতলের নাম দেব ‘ইমাম’।
যাকাতের বিষয়ে তিনি বলেন, মোবাইলে একটি অ্যাপস করা হয়েছে, যার কার্যক্রমের রিভিশন চলছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ ঘরে বসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত ফান্ডে টাকা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় আমরা পরিবর্তন এনেছি। এরই মধ্যে খরচ এক লাখ টাকা কমানো হয়েছে। হজ ব্যবস্থাপনায় ভেতরের কিছু ত্রুটিও দূর করা হয়েছে। সে সঙ্গে সরকার কিংবা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের খরচে কোনো অতিথিকে বিনা পয়সায় হজ আমরা করাব না বলে একমত হয়েছি। শুধু হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা যুক্ত একমাত্র তারাই হজে যাবেন। কোনো এজেন্সি যদি কোনো হাজির সঙ্গে প্রতারণা করে তাহলে তাকে আমরা ধরব।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ইমাম-মুয়াজ্জিনরা উপস্থিত ছিলেন। সভাশেষে তিনি নগরের আমানতগঞ্জ এলাকার আল জামিয়া আল ইসলামিয়া আল মাহমুদিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।
Discussion about this post