সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যিনি তাঁর অস্তিত্ব ও ক্ষমতার প্রমাণ বিশ্বজগতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর ব্যবস্থাপনা ও প্রজ্ঞার প্রমাণ বিশ্বজগতের কাছে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা তাঁর একত্ববাদের প্রশংসায় রত।
দয়া ও অনুগ্রহ বর্ষিত হোক মহানবী ﷺ, তাঁর পরিবার রাঃ, সাহাবীগণ রাঃ, তাবেঈনগণ রাঃ সহ সমগ্র মুসলিম জাতির প্রতি।
হে আল্লাহর বান্দারা!
আপনাদের রব আল্লাহকে ভয় করুন এবং তাঁকে না দেখে তাঁর প্রতি ঈমান আনয়ন করুন।
আল্লাহ বলেছেন:
“আলিফ লাম মীম। মহান গ্রন্থ আল কুরআন এমন একটি গ্রন্থ, যেখানে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। এটা আল্লাহভীরুদের জন্য হেদায়েত স্বরূপ। যারা অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখে, নামাজ কায়েম করে এবং তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।”
(সূরা আল বাক্বারা: ১–৩)
“যাদের মধ্যে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্য সমূহ পাওয়া যাবে, তারা হেদায়েতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম।”
(সূরা আল বাক্বারা: ৫)
অদৃশ্য বিষয়ে ঈমান আনয়নের ক্ষেত্রে সর্বপ্রধান বিষয় হলো আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। যা চক্ষু দ্বারা স্পর্শ করা অসম্ভব, যেখানে সর্বপ্রকারের ধারণা পরাজিত। আল্লাহর অস্তিত্বের দলীল এতোটাই মজবুত যে তাঁকে না দেখা সত্ত্বেও সৃষ্টি জগত তাঁর প্রতি ঈমান আনতে বাধ্য।
আল্লাহ বলেন:
“ঠিক এভাবেই আমি ইব্রাহিমকে (আঃ) আমার আসমান জমিনের রাজত্ব দেখিয়েছি, যেন সে অনড় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়।”
(সূরা আল আন’আম: ৭৮)
“তিনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি হলেন সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা। অতএব তাঁর ইবাদত করো। তিনি সকল কিছুর তত্ত্বাবধায়ক।”
(সূরা আল আন’আম: ১০২)
“আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি নৈপুণ্য যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন।”
(সূরা আন নামল: ৮৮)
“নিশ্চয়ই তোমাদের রব হলেন আল্লাহ, যিনি ছয় দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশের উপর সমুন্নত হন। তিনি রাত দ্বারা দিনকে আবৃত করেন, এটা খুব দ্রুত সংঘটিত হয়। চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র তাঁর আনুগত্যে রত। সৃষ্টি ও সিদ্ধান্ত তাঁর হাতেই। ভুমন্ডল নভোমন্ডলের রব আল্লাহ বরকতময়।”
(সূরা আল আ’রাফ: ৫৪)
“সূর্য চাঁদকে অতিক্রম করতে পারবে না এবং রাত দিনকে অতিক্রম করতে সক্ষম নয়। প্রত্যেকে নিজস্ব কক্ষপথে ভেসে বেড়াচ্ছে।”
(সূরা ইয়াসিন: ৪০)
আল্লাহ বলেন:
“তোমরা তোমাদের নিজেদের দিকে দেখো না?”
(সূরা আয যারিয়াত: ২১)
অর্থাৎ মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও দেহ সৃষ্টি তো বলে দেয় কোনো একজন মহান স্রষ্টা আছেন।
“বস্তুত জ্ঞানী লোক ছাড়া কেউই বুঝতে পারে না।”
(সূরা আল আনকাবুত: ৪৩)
“ঠিক এভাবেই তাদের ঈমান ও আনুগত্য বৃদ্ধি পায়।”
(সূরা আল আহযাব: ২২)
আল্লাহ আমাদেরকে কেন সৃষ্টি করলেন? তিনি বলেন:
“তোমরা কি ভেবেছো যে তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি?”
(সূরা আল মু’মিনুন: ১১৫)
“আল্লাহ তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সৃষ্টি করেছেন।”
(সূরা আস সিজদা: ৭)
সাইয়্যিদুনা মুসা আঃ বলেছিলেন:
“আমাদের রব সবকিছুকে আকৃতি দান করেন এবং পথ দেখিয়েছেন।”
(সূরা ত্বহা: ৫০)
কবি বলেন:
“জগতের মুখটা সবচে’ বড় মাইক্রোফোন। আল্লাহ হলেন স্রষ্টা, ইলাহ ও রূপকার। সকল পরমাণু এ কথার সাক্ষী যে আল্লাহ হলেন স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রণকারী।”
আল্লাহ বলেন:
“তোমরা কি গবেষণা করো না?”
(সূরা আল আন’আম: ৫০)
“এটাই আল্লাহর ফিতরাত, যে ফিতরতের উপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।”
(সূরা আর রোম: ৩০)
“আর্তনাদকারীর আহ্বানে তিনিই সাড়া দেন।”
(সূরা আন নামল: ৬২)
“তোমরা সমুদ্রে যখন বিপদে পড়ো এবং যাদের কাছে সাহায্য চেয়ে আহ্বান করো, তারা হারিয়ে যায়।”
(সূরা আল ইসরা: ৬৭)
অর্থাৎ আল্লাহকে ছাড়া যাদের ডাকো, তাঁরা কেউই সাহায্যে আসে না।
এক গ্রাম্য ব্যক্তি প্রিয় রসুল ﷺ–কে জিজ্ঞেস করলেন:
“আসমান জমিন কে সৃষ্টি করেছেন এবং পাহাড় সমূহ কে স্থাপন করেছেন?”
রসুল ﷺ বললেন: “আল্লাহ।”
অতঃপর নবী ﷺ তাকে ইসলামের রোকনসমূহ শিক্ষা দিলেন। লোকটি ইসলাম গ্রহণ করলেন। নবী ﷺ বললেন: “সে যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে, জান্নাত লাভ করবে।”
(সহীহ মুসলিম: ১২)
প্রিয় ভাইয়েরা!
সন্তানদেরকে ঈমান আক্বীদা শিক্ষা দিন, আল্লাহর তাওহীদ শেখান। এটাই দ্বীনের মূলভিত্তি।
দোয়া:
হে আল্লাহ! আপনার তাওহীদের প্রতি আমাদের ঈমান শক্তিশালী করুন। আমাদের মা–বাবাকে মাফ করুন এবং তাঁদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আমিন।
খতীব:
মুফতি এম কিউ এম সাইফুল্লাহ মেহরুজ্জামান
আবদুল্লাহ আস সানি সরকারি জামে মসজিদ
সাইফ জোন, শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত
Discussion about this post