শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দোলাচলে ছিল সমীকরণ। নেট রান রেটের হিসাব কষে কেউ বলছিল বাংলাদেশ ছিটকে গেছে, আবার কারও আশা ছিল শ্রীলঙ্কার হাতে ভরসা রাখলে হয়তো মিলতে পারে সুপার ফোরের টিকিট। শেষ পর্যন্ত সেই ভরসাই কাজে দিল—লঙ্কানদের জয়েই হাসলো বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপে সব হিসাব-নিকাশ আটকে ছিল এক ম্যাচে। শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান লড়াই ঠিক করে দেবে কারা যাবে সুপার ফোরে, আর কে বিদায় নেবে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার জয়ের অপেক্ষায় ছিল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। অবশেষে সেই প্রত্যাশাই সত্যি হলো—আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে লঙ্কানরা, আর একইসঙ্গে ভাগ্য খুলে দিয়েছে বাংলাদেশেরও।
শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে থামে আফগানিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ জুটি আর কার্যকরী ব্যাটিংয়ে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। এ জয়ের পর বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা একসঙ্গে সুপার ফোরে জায়গা করে নেয়, বিদায় নেয় রশিদ খানের আফগানিস্তান।
এরপর টুকরো টুকরো ইনিংস খেলে গড়ায় আফগানদের রান। ইব্রাহিম জাদরান করেন ২৪, দারউইশ রাসুলি ৯, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ৬। ইনিংসের মাঝপথে আফগানদের ভরসা হয়ে দাঁড়ান অধিনায়ক রশিদ খান ও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৫ রানের জুটি এনে কিছুটা আশা জাগান তারা। কিন্তু ২৪ রানে রশিদের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। পরে নবী লড়াই চালিয়ে যান একাই, তুলে নেন দলের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬০ রান।
তবে ১৭০ রানের লক্ষ্য শ্রীলঙ্কার জন্য খুব একটা কঠিন হয়নি। টপ অর্ডারের ব্যাটাররা শুরু থেকেই দেখিয়েছেন ইতিবাচক মনোভাব। উইকেট পড়লেও রানরেট কখনোই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারে জয় নিশ্চিত করে লঙ্কানরা।
লঙ্কানদের এই জয়ে যেন উল্লাসে ভাসল ঢাকাও। সুপার ফোরে টিকে গেল বাংলাদেশ, সঙ্গে ম্লান হলো আফগানিস্তানের স্বপ্ন। হংকং আগেই বিদায় নিশ্চিত করেছিল, এবার আফগানিস্তানও যোগ দিল তাদের সঙ্গী হিসেবে।
এশিয়া কাপের এই অধ্যায় শেষ হলো এক রোমাঞ্চকর সমীকরণের মধ্য দিয়ে—যেখানে অন্য দলের জয়ে টিকে রইল বাংলাদেশের আশা। এখন সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ, সুপার ফোরে সেরা ক্রিকেট খেলেই সেই আস্থার প্রতিদান দিতে হবে টাইগারদের।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য ভিন্ন রূপ দেখিয়েছিল আফগান ব্যাটিং। ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ আতল মিলে দুই ওভারেই তুলেছিলেন ২৬ রান। কিন্তু তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে জোড়া আঘাত হানেন লঙ্কান পেসার নুয়ান তুশারা। গুরবাজ (১৪) ও করিম জানাত (১) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। পরের ওভারেই আতলকেও (১৮) বোল্ড করে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলে দেন এই তরুণ পেসার।
Discussion about this post