চাঁদপুরের হাইমচরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া গ্রামের সজিবুল ইসলাম (২২)। এই তরুণের মৃত্যুর পাঁচ দিনের মাথায় তাঁর বাবাও মারা গেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বাবা-ছেলের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় মাতম চলছে।
স্বজনেরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সজিবুলের বাবা দাউদ মোল্যা (৬৫) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
সজীবুলের চাচা কালু মোল্যা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন দাউদ। গত সোমবার ছেলে সজীবুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে তিনি কেঁদেই চলছিলেন। স্বজনেরা সান্ত্বনা দিয়েও তাঁকে বোঝাতে পারেননি। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে পলাশবাড়িয়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
পাঁচ বছর ধরে জাহাজের বিভিন্ন পদে চাকরি করেছিলেন সজিবুল ইসলাম। সম্প্রতি পদোন্নতি পেতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলেন। মাঝের সময়টায় অলস বসে না থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরি নেন। চাঁদপুরের হাইমচরে দুই দিন আগে জাহাজে যে সাতজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তাঁদের একজন সজিবুল। তাঁর বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
সজিবুলের মামা আহাদ সরদার বলেন, ‘এই পরিবারের ওপর এভাবে ঝড় নেমে আসবে কল্পনাও করতে পারিনি। এক সপ্তাহ আগেও সব ঠিকঠাক ছিল। মাত্র পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয় সজীবুলের। সে জাহাজে ভালো পদে চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিল। আবার বাড়িতে বসে যাতে সময় নষ্ট না হয়, সে জন্য ছোট একটা জাহাজে চাকরি নিয়েছিল। সে মারা গেল। আর তার শোকে তার বাবাও অসুস্থ হয়ে মারা গেল। এর চেয়ে বেদনার আর কী হতে পারে।’