চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানার লালদিঘী এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম আলিফ (২৫) নামে এক শিক্ষানবীশ আইনজীবী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ছয়জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিদের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের সদস্যরা আদালত চত্বরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন এবং পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত চত্বর ছেড়ে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে অবস্থান নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অন্য একটি গোষ্ঠীর মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সহিংসতা শুরু হয়। এতে সাইফুল ইসলাম আলিফ গুরুতর আহত হন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ জানান, হাসপাতালে আনা ছয়জনের মধ্যে কারও অবস্থা গুরুতর নয়। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মন্নান জানান, তাদের হাসপাতালে ভর্তি ১৯ জন আহতের সবার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
সংঘর্ষের পর সনাতনী সম্প্রদায়ের বিক্ষোভকারীরা নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে, ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিয়ে একটি যুবকদের দল মিছিল সহকারে নিউমার্কেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “আমরা উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলছি এবং সংঘর্ষ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
লালদিঘীতে সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Discussion about this post