প্রশাসনকে চাপ দিয়ে বেআইনিভাবে বান্দরবানের পাহাড় লিখিয়ে নেওয়ার তালিকায় এবার নাম উঠে এসেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের নাম।
মন্ত্রী থাকার সময় তিনি নিজের স্ত্রীর নামে লিখিয়ে নিয়েছেন বান্দরবানের লামা উপজেলার ৩০৩ নম্বর ডলুছড়ি মৌজায় ২৫ একর তৃতীয় শ্রেণিভুক্ত পাহাড়।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) দিয়ে তিনি ওই জমিতে যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণ করিয়েছেন। দখল করেছেন আশপাশের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি, মসজিদের সংযোগ রাস্তা এবং প্রতিবেশীর পাহাড়।
এ নিয়ে এলাকাবাসী বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে জেলা সদরে মানববন্ধন করেছে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে।
জানা গেছে, ২০২২ সালে তিনি শায়েলা নাসরীনের নামে লিজ দেওয়া ২৫ একর তৃতীয় শ্রেণির জমির দলিল মূলে স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের নামে রেকর্ডভুক্ত করিয়ে নেন।
বোমাং সার্কেলের ৩০৩ নম্বর ডলুছড়ি মৌজার ৪৪৭ নম্বর দাগভুক্ত ১৪৮ (হর্টি) নম্বর হোল্ডিংয়ের ২৫ একর পাহাড় রাবার/হর্টিকালচার আবাদের জন্য ২০০০ সালে প্রথমে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার এ বি এম নুরুল আমিনের নামে ৪০ বছর মেয়াদি লিজ দেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক।
পরে পাহাড়টি গত ২২-১-২০০২ তারিখে এ বি এম নুরুল আমিনের পরিবর্তে শায়েলা নাসরীনের (পিতা : মৃত জামাল উদ্দিন, মাতা : সায়েরা বেগম, গ্রাম : নজু মিয়া হাট, দোকানবাড়ী, উপজেলা : হাটহাজারী, জেলা : চট্টগ্রাম) নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। সর্বশেষ একটি জমি হস্তান্তর চুক্তিনামা (দলিল নম্বর : ১০৭২/২০২০, তারিখ : ২৭-১২-২০২০) সম্পাদিত হয় তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের সঙ্গে শায়েলা নাসরীনের। এই দলিলের ভিত্তিতে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক রাবার বা হর্টিকালচার চাষের জন্য লিজ নেওয়া ২৫ একর পাহাড় দলিল সম্পাদনকারী ফৌজিয়া ইসলামের নামে রেকর্ড বা তৌজিভুক্ত করার আদেশ দেন।
সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা হলেও ১০৭২/২০২০ নম্বর দলিলে তাঁর স্ত্রীর ঠিকানা দেখানো হয়, দেরাজ মিয়া পাড়া, ৩০৩ নম্বর ডলুছড়ি মৌজা, উপজেলা-লামা, জেলা-বান্দরবান।
অনুমোদন দেওয়া জেলা প্রশাসকের আদেশেও একই ঠিকানা উল্লেখ থাকায় জমিটি সেভাবেই রেকর্ডভুক্ত হয়ে যায়।
Discussion about this post