বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভবন নির্মিত হচ্ছে সৌদি আরবের রিয়াদে। এতে ব্যয় করা হবে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ‘মুকাব টাওয়ার’ নামের মেগা স্থাপনাটি সম্পন্ন হলে এর উচ্চতা হবে ১ হাজার ৩০০ ফুট। আর প্রশস্ত হবে ১ হাজার ২০০ ফুট। যা ২০টি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের সমান।
বড়সড় কিউব আকৃতির হবে এই মুকাব টাওয়ার। এটি এতটাই বড় বিল্ডিং যে এর ভিতরে পর পর ২০টি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংও বসতে পারে। এটি রিয়াদে নির্মিত নতুন হাই-টেক সিটি মুরাব্বার অংশ হবে।
প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিল্ডিং শেষ হওয়ার পরে বিশ্বের বৃহত্তম বিল্ডিং হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এই বিল্ডিংয়ে থাকবে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ, হোটেল, অফিস এবং সমস্ত হাই-টেক সুবিধা।
এই ভবনের বিশেষত্ব কী কী
১. কিউবের মতো দেখতে এই ভবনটি ১,৩০০ ফুট উঁচু এবং ১,২০০ ফুট চওড়া হবে।
২. একবার সম্পূর্ণরূপে তৈরি হয়ে গেলে, এটি হবে নিউইয়র্কের বিখ্যাত এম্পায়ার স্টেট ভবনের মতো ২০টি ভবনের চেয়েও বড়।
৩. ১৯ বর্গকিলোমিটার এলাকায় নির্মিত এই ভবনে থাকবে এক লক্ষেরও বেশি অর্থাৎ ১০,৪০০০ বাড়ি, ৯,০০০ হোটেল রুম এবং ৯ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গমিটারের বেশি জায়গা জুড়ে শপিং করার জন্য দোকানপাটের ব্যবস্থা থাকবে।
৪. ভবনটির একটি বড় অংশ অফিস ব্যবহারের জন্য গড়ে তোলা হবে।
এআই দিয়ে সাজানো হবে সারা ভবন
ভবন দেখতে আসবেন যারা, তাদের আরো ভালো অভিজ্ঞতা দিতে এআই দিয়ে সাজানো হবে সারা বিল্ডিং। কোম্পানির দাবি, এই বিল্ডিংয়ে বিশাল স্ক্রিন থেকে শুরু করে হলোগ্রাফিক ইন্টেরিয়র সবকিছুই থাকবে। বিল্ডিংয়ের বাইরের দেওয়াল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিতে সজ্জিত করা হবে।
উল্লেখ্য, ভবনটি তৈরি করছে নিউ মুরাব্বা ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। এ প্রসঙ্গে, সংস্থাটি বলছে যে এই প্রকল্পে প্রায় ৯০০ জন শ্রমিক কাজ করবেন। ২০৩০ সালের মধ্যে মুকাব টাওয়ার সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হয়ে যাবে।
যদিও এই বিল্ডিংটি এখন সমালোচনার মুখে পড়েছে। ইসলাম ধর্মীয় মানুষের পবিত্র শহর কাবার মতো দেখতে হওয়ায়, অনেকেই এটি নিয়ে কথা বলছেন। ১৩০০ ফুট উঁচু ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুতি এবং অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার সংগঠন।
সৌদি আরব, তার দুর্ধর্ষ ডিজাইনের বিল্ডিংয়ের জন্য বিখ্যাত। যেমন, কয়েক বছর আগেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং হিসেবে জেদ্দা টাওয়ার তৈরি করেছিল দেশটি। কিন্তু ২০১৮ সালে নির্মাণ বন্ধ হওয়ার পর থেকে এটি অসমাপ্তই রয়েছে। দ্য লাইন নামে আরো একটি প্রজেক্ট, এ ক্ষেত্রে মরুভূমি জুড়ে ১৭০ কিলোমিটার প্রসারিত একটি কাঁচের শহর বানাতে চেয়েছিল সৌদি। কিন্তু এখন এটি মাত্র ২.৪ কিলোমিটারে বেশি বাড়ানো যাবে না।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের জন্য বেশ কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সলমান। দেশটিকে আরো আধুনিক রূপ দেওয়ার জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ শুরু করেছেন। নাম ‘সৌদি ভিশন ২০৩০’। তেলের রাজস্বের উপর নির্ভরতা কমাতে, অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং সরকারি পরিষেবা খাত গড়ে তোলার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি। মুরাব্বা শহর ছাড়াও, সৌদি আরবের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ভাসমান বন্দর শহর ‘অক্সাগন’, পর্বত পর্যটন কেন্দ্র ‘ট্রোজেনা’ এবং ‘এনইওএম’ নামক ‘ভবিষ্যতের শহর’।
Discussion about this post