বহুদিন পূর্বেও প্রবাসজীবন নিয়ে আমি অনেক পোস্ট দিয়েছিলাম ! এখনো যেহেতু পরবাসেই আছি ! লেখা থেমে নেই ! দিব্যি লিখে যাচ্ছি এবং চেষ্টা করে যাচ্ছি বাস্তবতাগুলো তুলে ধরার ! যেখান থেকে একজন অনাগত প্রবাসী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে !
প্রবাসজীবন মূলত: দু’প্রকার :
১. ব্যাচেলর কেন্দ্রীক !
২. পরিবার কেন্দ্রীক !
সঙ্গত কারণে ব্যাচেলর কেন্দ্রীক প্রবাস জীবন বা প্রবাসী ব্যাচেলরদের সংখ্যা সবসময় অনেক বেশী থাকে । রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে তাঁরাই যে কোন দেশের জন্য মূল অর্থনৈতিক চাবিকাঠি ! আমি প্রবাসজীবনে পা’ দেয়ার পর সারে চার বছর পর্যন্ত ব্যাচেলর জীবন কাটিয়ে ছিলাম !
তখন আমি ছিলাম ডাবল ব্যাচেলর! অর্থাৎ পরিবার বিহীন বিদেশে ! এবং তখন বিয়েও করিনি ! পক্ষান্তরে প্রবাসে অবস্থানরত ব্যাচেলরদের একটি বিরাট অংশ হলো বিবাহিত ব্যাচেলর ! অবিবাহিত প্রবাসীদের সংখ্যা নেহায়েত কম ! কয়েক মাস ধরে ব্যাচলরদের রুমে থাকতাম !
অতঃপর মসজিদের চাকরী পাওয়ায় সরকারী বাসা পেয়ে যাই ! তখন আমি হয়ে পড়ি খাঁটি সিঙ্গেল ব্যাচেলর ! অর্থাৎ পরিবারও নেই ! ব্যাচেলরদের রুমেও নই ! একাকী বড় বাসা নিয়ে পড়ে আছি ! এ অবস্থায় চার বছরেরও অধিক সময় পর্যন্ত একা থাকার পর দেশে গিয়ে বিয়ে করে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে পরিবার নিয়ে সরাসরি সরকারী বাসায় ! আজ অবধি এভাবেই রেখেছেন মহান মা’বুদ ।
ক্ষনিকের জন্য প্রবাসী ব্যাচেলর অবস্থায় থাকা মূহুর্তগুলো আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয় ! ঐ সময়টা খুব মনে পড়ে ! খুব অনুভব করি ! সপ্তাহ খানেক পূর্বে আমার এক ফেইসবুক বন্ধু জুমা’র নামাজের পর খাবার খাওয়ানোর জন্য তাঁদের ব্যাচেলর রুমে নিয়ে যান ! অনেকগুলো ভায়েরা গাদাগাদি করে এক সঙ্গে থাকেন ! সেই পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ায় চোখে জল এসে যায় ! আমি একটু সময়ের জন্য আবেগী হয়ে পড়ি ! কারণ এ মূহুর্তে এ শ্রেণীর ব্যাচেলর জীবন আমার জন্য সূদূরপরাহত ! কভু ফিরবেনা বাকি জীবনে !
Foreign Bachelor জীবনের উপকারিতা :
১. ভিন্ন ভিন্ন জেলা/ থানা ও এলাকার ভাইদের সঙ্গে এক সাথে থাকা ।
২. মিতালী ও বন্ধুত্ব স্থাপন ।
৩. সব বিষয়ে পারস্পরিক শেয়ার করা ।
৪. দেশ থেকে পাঠানো চালানী হরহামেশাই খাওয়ার সুযোগ ।
৫. চালানী পাঠানোর সুযোগ লাভ করা ।
৬. একে অপরের সংগে সুখ/ দু:খ ভাগাভাগি করে নেয়া ইত্যাদি ।
৭. অবশ্যই ক্ষেত্রে বিশেষে উল্টোটাও হতে পারে !!!
তাঁরা দেশে রেখে আসা পরিবারদের অনেক বেশী মনে করে থাকেন !
লেখক- শায়খ সাইফুল্লাহ মেহেরুজ্জামান, ইমাম, ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগ, শারজাহ।
Discussion about this post