চট্টগ্রামের চুনতি অভয়ারণ্য রেঞ্জ সংলগ্ন রেল লাইনে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত সেই হাতিটিকে বাঁচানো যায়নি। প্রায় ৪৪ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে হাতি শাবকটিকে উদ্ধার করে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়। গত রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুনতি অভয়ারণ্য রেঞ্জ সংলগ্ন রেল লাইনে এলিফ্যান্ট ওভারপাসের (রেললাইনের ওপর দিয়ে হাতি পারাপারের পথ) পাশে ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটি আহত হয়েছিল।
হাতিটির চিকিৎসায় গঠিত বোর্ড সদস্য এবং সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন জানান, আঘাতে হাতিটির মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। একটি পা ভেঙে হাড় বেরিয়ে গিয়েছিল। উপর থেকে পরে মাথায়ও গুরুতর আঘাত পেয়েছিল। কান ও শুঁড় দিয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রক্তক্ষরণ এত বেশি ছিল যে প্রাণীটিকে আর বাঁচানো যায়নি।
তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে যদি অপারেশন করা যেত, তাহলে হয়তো সেটিকে বাঁচানো যেত। কিন্তু হাতির শরীরে অস্ত্রোপচার করার মতো যন্ত্রপাতির আসলে আমাদের নেই। এটা খুবই দুঃখজনক যে, হাতিটিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।
ডা. জুলকার নাইন আরও বলেন, সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে হাতিটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেটি মারা যায়। এখন ময়নাতদন্তসহ অন্যান্য শেষে মাটিচাপা দেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার রাতে আহত হাতির চিকিৎসায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক বিবেক চন্দ্র সূত্রধরের নেতৃত্বে একটি বোর্ড গঠনের কথা জানায়।
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, ছয়টি হাতির একটি দল রোববার সন্ধ্যায় থেকে অভয়ারণ্যে বিচরণ করছিল। তবে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন হাতিটিকে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাণীটি গুরুতর আহত হয়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের খুব কাছেই আমাদের অফিস। আমরা সেখানে গিয়ে হাতিটির প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে সকালে চট্টগ্রাম থেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন এসে হাতিটিকে উদ্ধার করে সাফারি পার্কে নিয়ে যায়।
Discussion about this post