পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম আজ। বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানির (রহ:)-এ ওফাত দিবস বিশ্বের মুসলমানদের কাছে ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ নামে পরিচিত। ৫৬১ হিজরির ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তেকাল করেন।
ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব হলেন হজরত আবদুুল কাদের জিলানি। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসেবে সুবিদিত। সুফিরা তাকে বড়পীর নামে ব্যক্ত করেন। মুসলমানদের ধর্মীয় জীবনে তার প্রভাব অপরিসীম। তার জীবনী ও কীর্তিগাথা মুসলমানদের হৃদয়ে জীবন্ত হয়ে রয়েছে।
আবদুল কাদের জিলানি (রহ:) ৪৭০ হিজরিতে ইরাকের জিলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সায়্যেদ আবু সালেহ মুসা (রহ:) একজন বিখ্যাত বুজুর্গ ছিলেন। মাতা উম্মুল খায়ের ফাতেমা (রহ:) একজন বিদুষী রমণী ছিলেন। তার পিতা ছিলেন ইমাম হাসান ইবনে আলীর বংশধর ও মাতা ছিলেন ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর বংশধর।
আবদুল কাদের জিলানি অল্প বয়সেই পুরো কুরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হন। পিতার মৃত্যুর পর ১৮ বছর বয়সে তৎকালীন মুসলিম দর্শনের বিদ্যাপীঠ মাদরাসায়ে নিজামিয়াতে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। বাগদাদে যাওয়ার পথে ডাকাতদের কবলে পড়েও সত্য উচ্চারণ করে তিনি সত্যবাদিতার অনন্য নজির স্থাপন করেন। শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণতা অর্জনের পর তিনি নিজেকে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত করেন। বিভিন্ন মাহফিলে তিনি ইসলামের আদর্শ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় বর্ণনা করতেন। তার মাহফিলে শুধু মুসলমান নয়, অনেক অমুসলিমও অংশগ্রহণ করতেন। তার বক্তব্য শুনে অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।
ছোটবেলায় পিতার কাছ থেকে সুফিবাদে অনুপ্রাণিত আবদুল কাদের জিলানি পরে বাগদাদের মহান পীর হজরত আবু সাঈদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন মাখরুমি (রহ:)-এর কাছে মারেফাতের জ্ঞানে পূর্ণতা লাভ করেন এবং খিলাফত প্রাপ্ত হন। ৯১ বছর বয়সে ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত ইসলামের প্রচার ও প্রসারে নিয়োজিত ছিলেন কাদেরিয়া তরিকার এ প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কাব্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ের পণ্ডিত ছিলেন। তার রচিত বহু গ্রন্থ রয়েছে। এসব গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : ফুতুহ আল গাইব (অদৃশ্যের রহস্য), গুনিয়াতুত তালেবীন (অন্বেষকদের ধন), আল-ফুয়দাত আল-রব্বানিয়া (প্রভুর অনুগ্রহের প্রকাশ), আল-কাসিদা নামে কাব্যগ্রন্থ। এসব গ্রন্থ পৃথিবীর ২৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
ইফার আলোচনা ও দোয়া মাহফিল : এ উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ বাদ জোহর এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুগদা বায়তুল ওয়াদুদ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাদিকুর রহমান আল আজহারী।
Discussion about this post