নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় রায় আজ সোমবার হচ্ছে না। বিচারক ছুটিতে থাকায় এ মামলার রায় পিছিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ আদালত সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে আজ মামুনুল হকের মামলার রায় দেয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জেসমিন আরা বেগম মামলার রায় ঘোষণা করার তারিখ নির্ধারিত ছিল।
এর আগে, গত ৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন। এই মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামলার ধার্য তারিখ অনুযায়ী মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল। তবে বিচারক ছুটিতে থাকায় রায়ের তারিখ পিছিয়েছে। আশা করি, রায় হলে তিনি এই মামলায় বেখসুর খালাস পাবেন।
তিনি আরো বলেন, গত ৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আমরা সেদিন আদালতকে বলেছিলাম পুরো বিষয়টিকে যোগসাজেশ করে সংগঠিত করা হয়েছে। যিনি মামলার বাদি তিনি শারীরিক পরীক্ষা দিতে রাজী হননি। কারণ তিনি স্বীকার করেছেন মামুনুল হক তার বৈধ স্বামী। একই সাথে বাদির ছেলে আব্দুর রহমান সাক্ষী দিতে এসে বলে গিয়েছিলেন তার মা মামুনুল হকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের ওপর বলপ্রয়োগ করে মামলা করানো হয়েছিল।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো: রোমেল মোল্লা বলেন, মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষী শেষ হয়েছে। সেইসাথে যুক্তিতর্কও শেষ হয়েছে। এখন রায়ের অপেক্ষায়।
এর আগে, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সাথে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করে। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করছিলেন। এসময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে।
এরপর ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুল হককে। পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
এদিকে, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে জামিন আবেদন করলে তৎকালীন বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর থেকে তিনি সোনারগাঁ থানার এই ধর্ষণ মামলায় জামিনে রয়েছেন।
Discussion about this post