বিষয়ঃ তোমার উপর তোমার দেহের হক্ব বা অধিকার রয়েছে ।
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য । যিনি স্রষ্টা এবং সুসজ্জিত করে সাজিয়েছেন সৃষ্ট মানবজাতিকে ।আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, প্রিয় নবী করিম সাঃ আল্লাহর বান্দা ও রসুল ।হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো । প্রত্যেকের ভাবা উচিত আগামীর জন্য সে কি নিয়ে যাচ্ছে ( পরকালের জন্য ) ।
সুপ্রিয় মুসল্লীগণ ! আত্মার শান্তি ও দৈহিক সুস্থতা মানবজীবনে এক বিশাল নেয়ামত । মহানবী সাঃ বলেন “ আত্মার শান্তি গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামত সমূহের অন্যতম ।” আল্ আদাবুল মুফরাদ ৩০১
ইসলাম মানুষের দৈহিক সুস্থতাকে অনেক বেশী গুরুত্ব দিয়েছে । আর তাই এমন কিছু করা জায়েজ নেই, যদ্ধারা দেহের ক্ষতি হয় । শারীরিক অবনতির আশংকা থাকে । মহানবী সাঃ বলেন “ তোমার উপর তোমার দেহের হক্ব বা অধিকার রয়েছে ।” ছহীহুল বোখারি ১৯৬৮
সুতরাং যে সকল খাদ্যদ্রব্য দ্বারা দেহের ক্ষতি হতে পারে, তা থেকে বিরত থাকতে হবে । আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন “ সে ব্যক্তি সফলকাম, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিয়েছে । পক্ষান্তরে সেই ব্যর্থ, যে নিজের আত্মাকে কলুষিত করেছে । সূরা আশ শাম্স ৯-১০
সফলতার জন্য আল্লাহর স্মরণ হলো উত্তম রাস্তা । নিশ্চয়ই আল্লাহকে স্মরণ করার মধ্যেই আত্মার প্রশান্তি নিহিত ।” সূরা আর রা’দ ২৮
হে বিলাল রাঃ ! নামাজের জন্য আযান দাও । এতে আমি প্রশান্তি অনুভব করি । “ বলেছেন বিশ্বনবী সাঃ । সুনানে আবু দাউদ ৪৯৮৫
মহানবী সাঃ আরো বলেন “ আমার জন্য নামাজের মধ্যে চক্ষুশীতল করে দেয়া হয়েছে ।” সুনানে নাসাঈ ৩৯৩৯
অর্থাৎ মহানবী সাঃ যখনই নামাজে দাঁড়াতেন, তাঁর আত্মা শান্তি প্রশান্তিতে ভরে যেতো ।” সাইয়্যিদুনা আবু দারদা রাঃ বলেন “ আল্লাহপাক কারো প্রতি যখন স্নেহশীল হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেন, তাকে দিয়ে এমন আমল করান, যাতে তিনি সন্তুষ্ট হয়ে যান ।”
لابن ابي الدنيا ٤٩
অকল্যাণ নাজিল হলে মানুষ নিরাশ ও হতাশ হয়ে পড়ে ।” সূরা ফুস্সিলাত ৪৯. অর্থাৎ মানুষ অতিরিক্ত ধন সম্পদ পেলে খুব খুশি ! পক্ষান্তরে সামান্য বিপদে নার্ভাস হয়ে পড়ে । আর তাই আল্লাহপাক বললেন “ বলুন ! আমাদের জন্য আল্লাহপাক যা লিখেছেন, তাঁর বাইরে কোন বিপদ সংঘটিত হবেনা ।” সূরা আত তাওবা ৫১
এমনও হতে পারে যে, তোমাদের যা অপছন্দ সেখানে আল্লাহপাক কল্যাণ রেখেছেন ।” সূরা আল্ বাক্বারা ২১৬
উত্তম বাক্য শান্তি এনে দেয় ।” বলেছেন বিশ্বনবী সাঃ । মুসনাদে আহমদ ২৪৯৮২
আল্লাহপাক বলেন “ আমি আমার বান্দার উত্তম ধারণার উপর থাকি । “ ছহীহুল বোখারি ৭৪০৫ , ছহীহ মুসলিম ২৬৭৫
অর্থাৎ বান্দা যদি বিশ্বাস করে যে, আল্লাহপাক তাঁর সাথে সহজ করবেন, তা’হলে তাই হবে । শযতান তোমাদেরকে গরীব হওয়ার ভীতি প্রদর্শন করে থাকে ।” সূরা আল্ বাক্বারা ২৬৮
অর্থাৎ দারিদ্রতার আশংকা ও টেনশান ঢুকিয়ে দেয় অন্তরে ! শয়তান এটি করে থাকে ঈমানদারদেরকে পেরেশান করার জন্য । সূরা আল্ মুজাদালাহ ১০
মহানবী সাঃ বলেন “ সে ব্যক্তি সফলকাম, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং আল্লাহপাক তাকে প্রয়োজন মাফিক যথাযথ রিজিক প্রদান করেছে । যেখানে সে সন্তুষ্ট ।” ছহীহ মুসলিম ১০৫৪
মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ জানেন । যা তোমরা জানোনা ।” সূরা আল্ বাক্বারা ২১৬
ওহে পিতা বাবারা ! ঘরে যখন ফিরবেন, সব কষ্ট দুঃখ টেনশান ভুলে গিয়ে পরিবারের সাথে মুচকি হাসুন । ভালোবাসা ও মহব্বত দিয়ে সবাইকে ঘিরে বসুন ।আল্লাহপাক যখন কোন পরিবারের প্রতি কল্যাণ চান, অনুগ্রহ দিয়ে ভরিয়ে দেন ।”
ছহীহুত তারগীব ২৬৬৯
নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা ইব্রাহিম আঃ ছিলেন কোমল হৃদয় ও সহিষ্ণু ।” সূরা আত তাওবা ১১৪
অর্থাৎ পরিবারের সাথে আন্তরিক হোন ।
আর তাই এই নবী আঃকে আল্লাহপাক ইসমাঈল আঃ’র ন্যায় সন্তান দান করেন এবং বলেন “ আমি তাঁকে একটি সহিষ্ণু সন্তান প্রদানের সু সংবাদ দিয়েছিলাম ।” সূরা আস সাফ্ফাত ২০১
ইয়া আল্লাহ ! আমাদেরকে মানসিক শান্তি দান করুন । দেহের হক্ব আদায় করার তওফিক দান করুন । আমাদের মা বাবাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তাঁদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন । আমিন ।
Discussion about this post