সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনের কর্মচারি জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছে সিআইডি।
জাহাঙ্গীর আলম নাম হলেও তিনি অনেকের কাছে পানি জাহাঙ্গীর নামেও পরিচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন, তখন তার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার মূল কাজ ছিল, সুধা সদনে আসা লোকজনের কাছে খাবার পানি সরবরাহ করা।
এ কারণে তখন তার নাম হয়ে যায় পানি জাহাঙ্গীর। কিন্ত পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেয়া শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর আলম। এই পরিচয়ে তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ পেয়েছেন। কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি চার শ’ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন।
এছাড়া, গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে সাত কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ থাকার কথাও জানা যায়, যার মধ্যে ধানমন্ডিতে দুই হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, একটি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
জাহাঙ্গীর আলমের নিজের নামে এলাকায় চার কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দু’টি দোকান, মিরপুরে সাততলা ভবন ও দু’টি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন ও চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে।
এছাড়াও, তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়নপুর এলাকায়, যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়ায় দেয়া আছে।
জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলে জানা যায়।
সূত্র : বিবিসি
Discussion about this post