পেছনের দরজা দিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইছে, এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। এবার সৌদি আরবের একজন প্রভাবশালী রাজকুমারী যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ওয়াশিংটনে একটি সম্মেলনে ওই রাজকুমারী হাজির হয়েছিলেন বলে খবর প্রকাশ করেছে নিউ আরব।
খবরে বলা হয়েছে, গেল ৮-৯ সেপ্টেম্বর ওই সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন রাজকুমারী রিমা বিনতে বন্দর। সৌদি এই রাজকুমারী ওয়াশিংটনে রিয়াদের রাষ্ট্রদূত হিসেবে হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
একদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সমাধান আরেক দিকে জাতীয় স্বার্থ। এ দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য করতে চাইছে সৌদি আরব। গাজায় যুদ্ধ চলমান থাকলেও ইসরায়েল ও সৌদি আরবের কর্মকর্তারা গোপনে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা সফল হলে লাভবান হবে সৌদি ও ইসরায়েল উভই।
সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এই প্রচেষ্টা বেশ তোড়জোড় চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ আর মাত্র কয়েক মাস ক্ষমতায় থাকবেন জো বাইডেন। তার পদত্যাগের আগেই এর রফাদফা করতে চায় ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার আবারও সেই ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পদত্যাগ করার আগেই ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ইসরায়েলপন্থি মার্কিন কূটনীতিক ডেনিস রস, এলিয়ট আবরামস এবং ইসরায়েলে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম নাইডস ও ডেভিড ফ্রিডম্যানসহ দুই শতাধিক মার্কিন, ইসরায়েলি ও মধ্যপ্রাচ্যের কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ইসরায়েলি সামিটে হাজির হয়েছিলেন। সম্মেলনে আঞ্চলিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জানা গেছে, সেখানে গাজা ইস্যু, লেবাননের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধ, ইরানের পরমাণু হুমকি, ইসরায়েল-আরব সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিয়েও কথা বলেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে মরক্কো ও বাহরাইনের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে হাজির হন ওয়াশিংটনে সৌদি রাষ্ট্রদূত রাজকুমারী রিমা বিনতে বন্দর। আব্রাহাম অ্যাকর্ডের আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে এই দুই দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল।
ওাশিংটনে ওই অনুষ্ঠানে সৌদি রাজকুমারী কী মন্তব্য করেছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে উপস্থিত ইসরায়েলি সাংবাদিকরা জানান, তার বক্তব্য অনুপ্রেরণামূলক ছিল।
সৌদি আরব বারবার বলে এসেছে তারা দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দেখতে চায়। সম্প্রতি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জোর দিয়েই বলেন, তার দেশ একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তাই ইসরায়েলের সঙ্গে যে কোনো ধরনের চুক্তি হওয়ার আগে এই ইস্যুর সমাধান হওয়া দরকার। যদিও গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকের জোর গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য অনানুষ্ঠানিক কিছু পদক্ষেপও নিয়েছিল সৌদি আরব ও ইসরায়েল। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি ফ্লাইটের জন্য সৌদির আকাশসীমা খুলে দেওয়া এবং স্পোর্টস ইভেন্টে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের অংশগ্রহণ অন্যতম।
তবে দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিকের খুব কাছাকাছি চলে এলেও তেল আবিবকে স্বীকৃতি দেওয়া ও দূতাবাস খোলার মতো সিদ্ধান্ত থেকে দূরেই ছিল রিয়াদ।
Discussion about this post