বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলের চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন একথা জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম গত সাড়ে ৪ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৪৭৯তম দিন হাসপাতালে ছিলেন। সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেয়া হয়। তবে বুধবার রাতে আবার তাকে ভর্তি করতে হয়েছে।
উন্নত চিকিৎসায় দেশের বাইরে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। বিমানে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। ফ্লাই করার জন্য নেগেটিভ প্রেসার কতটুকু? ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু সহ্য করতে পারবেন সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়। মেডিকেল বোর্ড সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশী সদস্যরা আলোচনা করছেন। খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে একটু সুস্থ হলেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাইরে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।
কেনো উন্নত সেন্টারে নেয়া জরুরী উল্লেখ করে ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু রোগের সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো সত্যিকার অর্থে বাইরের আধুনিক সেন্টারে নিয়ে দেখানো ছাড়া এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নাই। ম্যাডামের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। তিনি আাপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার পর একাকীত্ব, চিকিৎসা না করানো এবং সংকটাপন্ন একটা অবস্থায় রেখে দেয়ার বিষয়টা বিগত সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ ছিলো। অসুস্থ হওয়ার পর বিএসএমএমইউ’তে ভর্তি করিয়েছিলো। সেখানে যে চিকিৎসা হওয়া উচিত তার কোনো কিছুই সঠিকভাবে হয় নাই। যার জন্যই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উনাকে কয়েকদিন পরপরই দেখা যাচ্ছে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।
জাহিদ জানান, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার রাতে ম্যাডামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ম্যাডামকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কেবিনে আছে। মেডিকেল বোর্ড তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে।
বুধবার দিবাগত রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ওই হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি করা হয় বলে তার ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন দৈনিক মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এরআগে রাত ১টা ৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসভবন (ফিরোজা) থেকে খালেদা জিয়া হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। হাসপাতালে পৌঁছান রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডন জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়
Discussion about this post