সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরায় নির্মাণাধীন একটি স্কুল ভবনের ছাদ ধসে দুই বাংলাদেশিসহ অন্য এক পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন। এ সময় আরবের দুই নাগরিক আহত হন। সবাই কাজের মধ্যাহ্ন বিরতিতে বিশ্রাম গ্রহণের সময় নির্মাণাধীন ভবনের ছাদটি ধসে পড়ে।
নিহত দুই বাংলাদেশি হলেন- মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কুরবানপুর ইউনিয়নের ইসলামগঞ্জ বাজার এলাকার মোহাম্মদ রফিকের ছেলে আবদুস সামাদ (৪৩) ও অন্যজন হলেন নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার পূর্ব শোশালিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দাশঘড়িয়ার বেলাল হোসেনের ছেলে ফরিদ হোসেন ইমেল (৩১)। দুজনই ফুজাইরাহর আল হিল সানাইয়া এলাকায় থাকতেন বলে তাদের প্রতিবেশী আল হিলে বসবাসকারী প্রবাসী সংগঠক মোহাম্মদ হাছান মুরাদ পূর্বকোণকে জানান।
সামাদ বিগত ১৫ বছর ধরে এবং ইমেল ৫ বছর ধরে আমিরাত প্রবাসে আছেন। তারা পেশায় ছিলেন ওয়েল্ডিং টেকনিশিয়ান। সামাদ ফুজাইরাহর আল জাইদি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কসে এবং ইমেল আল জাহান ওয়েল্ডিং ওয়ার্কস কোম্পানিতে কাজ করতেন বলে হাছান মুরাদ জানান।
স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক খালিজ টাইমস ও শারজাহ পুলিশ বলেছে দুর্ঘটনাটি শারজাহর কালবা সিটিতে নির্মাণাধীন একটি সরকারি স্কুলের ছাদ ধসে ঘটেছে। পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স ও ক্রাইম সিন টিম হতাহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ ছাদ ধসের প্রকৃত কারণ তদন্ত করে দেখছে।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাস্থলেই দুই বাংলাদেশির মৃত্যু ঘটে এবং এতে আহত অপর তিনজনকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে রাতে তাদের মধ্যে এক পাকিস্তানি মৃত্যুবরণ করেন।
চট্টগ্রাম প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ ফুজাইরাহর সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক (মাহাবু) পূর্বকোণকে জানান, নিহত সামাদ আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দেশে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকেট কেটে রেখেছিলেন কিন্তু এখন তার বদলে তার নিথর নিষ্প্রাণ দেহ যাবে দেশে। যেখানে তার এক কন্যা, এক শিশুপুত্র ও স্ত্রী রয়েছেন। অন্যদিকে ইমেলের ঘরে অসুস্থ শিশুপুত্র ও স্ত্রী আছেন। দুজনই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ কনসুলেট দুবাইয়ের লেবার কাউন্সিলর আবদুস সালাম পূর্বকোণকে বলেন, খালিজ টাইমসে এ ধরনের একটি নিউজ পড়েছি কিন্তু তাতে বলা আছে নিহতরা এশিয়ান। কোন সূত্র থেকে নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি আছেন জানলে এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম। তবে তিনি একথাও বলেন যে নিহতদের স্বদেশে নেয়ার ব্যাপারে কেউ সহযোগিতার জন্য আসলে দুবাই কনস্যুলেট সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ বর্তমানে শারজাহর কালবা হাসপাতালের হিমঘরে রয়েছে।
Discussion about this post