শ্বাসরুদ্ধকর সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ফাইনালে নেপালকে উড়িয়ে দিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এর আগে তিনটি ফাইনাল খেললেও শিরোপা অধরা ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। তবে চতুর্থবারের চেষ্টায় ফাইনালে সফলতার গল্প লিখলো বাংলাদেশ।
বুধবার (২৮ আগস্ট) নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল দুই দল। এই ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে গ্রুপ পর্বে ২-১ গোলের হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে সফরকারীরা।
এদিন পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে ছিল নেপালের সমর্থন। ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলেও এগিয়েছিল স্বাগতিকরা। বেশ কয়েকটি আক্রমণের সুযোগও তৈরি করে নেপাল। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে সেই আক্রমণকে গোলে রূপান্তর করতে ব্যর্থ হয় তারা। বিপরীতে পাল্টা আক্রমণে গেলেও সেই রকম সুযোগ তৈরি করতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
তবে বিরতিতে যাওয়ার আগে গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৪৫ মিনিট শেষে রেফারি ২ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। সেই সময় বক্সের বাইরে বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড মিরাজুল ইসলামকে ফাউল করে। রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান।
বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শট নেন মিরাজুল। বাঁকানো শটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক সম্পূর্ণ পরাস্ত হন। সাইড পোস্টে লেগে বল জালে জড়ায়। বাংলাদেশের গোলের সঙ্গে সঙ্গে আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারি নীরব হয়ে যায়। এতে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দুর্দান্ত আক্রমণে ৭ মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। নেপালের বক্সে ফেলা ক্রস বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড সতীর্থ মিরাজুলের উদ্দেশে পাঠান। পোস্টের সামনে ফাঁকায় দাঁড়ানো মিরাজুল হেডে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি।
২-০ তে পিছিয়ে পড়ার পর আর খেলায় ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরা। ফলে আরও আধিপত্য নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশি ফুটবলাররা। সেই সঙ্গে ৭০ মিনিটে ম্যাচের ব্যবধান আরও বাড়ায় রাব্বি হোসেন। এবার অ্যাসিস্ট করেছেন জোড়া গোল করা মিরাজুল। তার বাড়ানো বলে বক্সে আড়াআড়ি শটে গোল করেন রাব্বি।
অনূর্ধ্ব-২০ সাফের ম্যাচ হলেও এদিন মাঠে উত্তেজনা ছিল অনেক। ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়াই নেপালী দর্শকরা বাংলাদেশি বক্সে বোতল ছুড়ে। দুই দলের ফুটবলাররাও উত্তপ্ত ছিলেন। খেলায় ফেরার চেষ্টা করে নেপাল।
তবে দুর্দান্ত আক্রমণে ম্যাচের ৮০তম মিনিটে গোল করতে সফল হয় নেপাল। মাঝ মাঠ থেকে বাংলাদেশ বক্সে পড়ে। গোলরক্ষক আসিফ ও ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে পারেননি। বক্সে ফাকায় দাঁড়ানো নেপালী ফরোয়ার্ড হেডে জালে পাঠান।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে রেফারি ১০ মিনিট ইনজুরি সময় দেয়। নেপাল গোলের চেষ্টা করতে গিয়ে পাল্টা আক্রমণে আরও এক গোল হজম করে। শেষ পর্যন্ত নেপালকে ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
Discussion about this post