প্রবাস থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর দুই দিনের মধ্যে তা প্রাপকের হাতে পৌঁছে দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গেল ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করে বলেছিল, ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে দুই দিনের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রাপকের হাতে পৌঁছে দিতে হবে।
এসময় ব্যাংকগুলোকে এ নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নোটিশে বলেছে, ‘সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে যে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।’
এই উদ্যোগ এমন সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন আমদানি বিলসহ অন্যান্য পেমেন্ট দেওয়া ক্ষেত্রে দেশ বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিতে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসা কমে গেছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি চাকরির জন্য বিদেশে গেছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেমিট্যান্স আয় আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে চার দশমিক নয় বিলিয়ন ডলার।
গত সেপ্টেম্বরে টানা তিন মাস ধরে রেমিট্যান্স কমেছে। গত মাসে প্রবাসী শ্রমিকরা এক দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এটি গত বছরের তুলনায় ১২ দশমিক সাত শতাংশ কম এবং গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গত ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এর আগের দুই মাসের তুলনায় তা খানিকটা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, অক্টোবরে দৈনিক গড় রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ৬০ মিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বরে এটি ছিল ৪৫ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার এ নির্দেশনা জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি যে তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স সময়মতো প্রাপকের হাতে পৌঁছাচ্ছে না। তাই ব্যাংকগুলোকে এই নিয়ম মেনে চলতে বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকরা সময়মতো সেবা পেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়তে পারে।’
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘যেসব ব্যাংক ইতোমধ্যে অটোমেটেড করা হয়েছে, সাধারণত সেসব ব্যাংকে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স তাৎক্ষণিকভাবে জমা হয়ে যায়।’
যেসব ব্যাংক এখনো পুরোপুরি অটোমেটেড হয়নি, সেসব ব্যাংকের রিয়েল টাইম রেমিট্যান্স ট্রান্সফার নিশ্চিত করতে অ্যাপ্লিকেশন ইন্টারফেসের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
Discussion about this post