ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে অবৈধ পন্থায় সমুদ্রপথে ইতালি যাত্রাপথে মো. সম্রাট (২৪), মামুন শেখ (২০) ও সজল বৈরাগী (২৫) নামের তিন বাংলাদেশীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও আপন শেখ নামের আরও এক বাংলাদেশী নিখোঁজ আছেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই তিন যুবকদের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা যায়, পাঁচ মাস আগে রাসেদ খান নামে এক দালালের মাধ্যমে মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পাঁচখোলা গ্রামের আলি আক্কাবরের ছেলে মো. সম্রাট ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পাড়ি দিয়েছিলেন ইতালির পথে। এ সময় দালাল সম্রাটের পরিবারের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নেয়। এরপর লিবিয়ার একটি বন্দিশিবিরে আটকে রেখে চালানো হয় নির্যাতন। ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হতো না। হঠাৎ করেই খবর আসে সম্রাট মারা গেছে।
সম্রাটের ভাই আজগর এক গণমাধ্যমকে জানান, কতগুলো টাকা খরচ করে ভাইকে বিদেশ পাঠিয়েছি। এখন আমার ভাই নাই। সে মারা গেছে। এখন টাকাও গেল ভাইও গেল। আমরা এর বিচার চাই। দালাল আমার ভাইকে মেরে ফেলছে।
জানা গেছে, দালাল রাসেদ খান ও তার ভাই টুলু মাদারীপুরের বিভিন্ন সহজ-সরল মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন করে। তার বিরুদ্ধে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে একাধিক মামলা রয়েছে।
এরআগে, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ ও সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগীসহ বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে গত বুধবার লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওনা দেন তারা। ৩২ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন নৌকায় ৫২ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে যায়। এতে মামুন ও সজলসহ মারা যায় ১২ জন। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড।
নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজিব শেখ ও নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী জানান, মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয় ১৩-১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা।
সরকারিভাবে তাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।
জেআই/
Discussion about this post