আজ বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। শিশু ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০২ সালে চাইল্ড ক্যানসার ইন্টারন্যাশনাল (সিসিআই) দিবসটি পালন করে আসছে। ‘যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসায় শিশু ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব’ প্রতিপাদ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও সারাবিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ডহুড ক্যান্সার (আইসিসি) বলছে, বিশ্বে প্রতিবছর ৪ লাখের বেশি শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যার ৫ শতাংশ শিশু। আক্রান্তদের ১০ শতাংশের কম রোগী চিকিৎসার আওতায় আসছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ২০ লাখের বেশি ক্যান্সার রোগী রয়েছেন, যাদের ৫ শতাংশই শিশু। এসব শিশুর ৭৮ শতাংশই আবার ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। শিশুদের বেশির ভাগ ক্যান্সার জন্মগত হলেও পারিপার্শ্বিক পরিবেশও কম দায়ী নয়। রক্তে সেলগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হওয়ায় শিশুরা বেশি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক। এসব রোগীর চিকিৎসায় রয়েছেন মাত্র ৪৭ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
উন্নত দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার সুযোগ হলে ৮০ শতাংশ শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে, মধ্যম আয়ের দেশে এ হার ৬০ শতাংশ।
জিনগতভাবে শিশুরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় বড় একটি অংশ শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছে। আবার শনাক্তদের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে মাঝপথে হাল ছেড়ে দিচ্ছেন। মাত্র ৩০ শতাংশ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করছে।
জানা গেছে, বিএসএমএমইউর শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ৪ হাজার ৭৮০ জন।
এতে দেখা গেছে, সেবাগ্রহীতা শিশুদের ৭৮ শতাংশ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। টিউমার ক্যান্সারে ৮ দশমিক ৬ ও অন্যান্য ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৩ শতাংশ। অথচ ২০১৮ সালের তথ্য পর্যালোচনায় সেবাগ্রহীতা শিশুদের ৩৩ ভাগ ব্লাড ক্যান্সারের রোগী পাওয়া যায়।
এদিকে, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্যান্সারে শিশু মৃত্যুর হার ৬০ ভাগ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
শিশুদের ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ-২০৩০ ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে শিশুদের ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৬০ ভাগ কমিয়ে আনতে হবে। সেটি নিশ্চিত করতে হলে সব রোগীর জন্য সারাবিশ্বে সর্বোত্তম মানের স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
Discussion about this post