পরিবারের হাল ধরতে এক বছর আগে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান মো. আসিফ সিকদার (২৩)। পাইপ ফিটিংয়ের কাজ করে প্রতি মাসে পরিবারের জন্য ৪০ হাজার করে টাকা পাঠাতেন। এতে তার সংসার ভালোভাবেই চলত।
হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হলে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে পরীক্ষা করে তার দুটি কিডনি বিকল হওয়ার খবর জানা যায়। বর্তমানে আসিফ সিকদার সিঙ্গাপুরেই অবস্থান করছেন। সুস্থতার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
আসিফ সিকদার টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বহুরিয়া গ্রামের মো. মোসলেম সিকদারের ছেলে।
মোসলেম সিকদার জানান, আসিফ সিকদার ছাড়াও এক মেয়ে রয়েছে তার। মেয়ে কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়েছে। আসিফ সিকদার এসএসসি পাশের পর শাহীন কলেজে ভর্তি হয়েছিল। দেড় বছর ওই কলেজে পড়াশোনা করার পর গত বছর ৬ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর যায় আসিফ সিকদার। সিঙ্গাপুর যেতে আসিফের পরিবারের সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে আসিফ পাইপ ফিটিংয়ের কাজ করে মাসে ৪০ হাজার টাকা করে বাড়িতে পাঠাত।
তিনি জানান, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত হলে তার বন্ধুর সহযোগিতায় সিঙ্গাপুর চাঙ্গি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দুটি কিডনিই ড্যামেজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। তারপর থেকে আসিফ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
মোসলেম সিকদার আরও জানান, বাড়ির জমানো টাকা পাঠিয়ে আসিফ সিকদারের চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তাকে দেশে এনে ভারতের দিল্লিতে চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথমে তার মা আসিফকে একটি কিডনি দিতে চেয়েছিল কিন্তু আসিফের মায়ের কিডনি এবি পজিটিভ ও আফিসের কিডনি বি পজিটিভ। যে কারণে নিজেদের পক্ষ থেকে কিডনি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিডনি, মেডিসিনসহ ৩০ লক্ষাধিক টাকার বেশি খরচ হবে। জমি বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তাই সবার সহযোগিতা কামনা করেন আসিফ ও তার বাবা মোসলেম।
মোসলেম সিকদার বলেন, আমার আর কোনো ছেলেসন্তান নেই। আসিফই আমার বংশের প্রদীপ। আসিফকে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম আতিকুর রহমান বলেন, আসিফ খুবই ভালো ছেলে। তার সুস্থতার জন্য দেশ ও সিঙ্গাপুর থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ছয় লাখ টাকার উপরে সংগ্রহ করা হয়েছে। তার জন্য একটি কিডনির ডোনার খোঁজা হচ্ছে। ডোনার পেলে আসিফের পরিবারের জন্য অনেক উপকার হবে।
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম বলেন, আসিফ বা ওর পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করলে সেটি জেলা প্রশাসনে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসকের ফান্ড থেকে আসিফকে সহযোগিতা করার জন্য সুপারিশ করা হবে।
Discussion about this post