দেশের বাইরে অবস্থান করে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রবাসীদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে উস্কানিমূলক ও বানোয়াট বক্তব্য দেওয়া প্রবাসীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, ডা. হাবিবে মিল্লাত ও নাহিম রাজ্জাক।
কমিটি আগের বৈঠকে দেশের বাইরে অবস্থান করে অপপ্রচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে সুপারিশ করেছিল। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ওই সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বা অভিবাসীরা দেশের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রবাসীদের অনেকেই বাংলাদেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণায় লিপ্ত হন। সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, উস্কানিমূলক ও সম্পূূর্ণ বানোয়াট বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি বা বিচারের মুখোমুখি করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
কমিটির আগের বৈঠকে বিদেশে অবস্থানকারীদের সরকারবিরোধী প্রচারণা নিয়ে কমিটির সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, অপশক্তিগুলোর ক্রমাগত অপপ্রচারের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কিছু দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া সুইডেনের ‘নেত্র নিউজ’ মিথ্যা ও অর্ধ সত্য তথ্য মিলিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। আগামী সাধারণ নির্বাচন কেন্দ্র করে একটি চক্র ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
আরেক সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, দেশবিরোধী চক্রটি বিভিন্ন ধরনের অসত্য তথ্য দিয়ে দেশের মধ্যে একটি অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই চক্রের ২২ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।
আরেক সদস্য নাহিম রাজ্জাক সরকার তথা দেশবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, ইইউভুক্ত কয়েকটি দেশে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা বেশি হচ্ছে বিধায় এসব দেশে সংসদীয় কমিটির সদস্যরা ছয় মাসের মধ্যে পরিদর্শন করবেন।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এসব বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ইউরোপের বেশ কিছু দেশে সরকার তথা দেশের বিরুদ্ধে একটি চক্র ব্যাপক আকারে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এগুলো প্রতিরোধে তিনি কমিটির পরামর্শ কামনা করেন।
Discussion about this post