ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসায় সদ্য প্রয়াত আল্লামা ড. ইউসুফ আল-কারজাভির গায়েবানা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর গায়েবানা নামাজে অংশ নেন উপস্থিত হাজারো মুসল্লি। এ নিয়ে দ্বিতীয় বার পবিত্র মসজিদুল আকসায় ড. ইউসুফ আল-কারজাভির জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলজাজিরা মুবাশির সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জুমার সময় মসজিদুল আকসার খতিব শায়খ মুহাম্মদ সারানদাহ বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহ একজন বরেণ্য আলেমকে হারালো। যিনি ছিলেন প্রাচীন ও আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয়ক, সত্য ও সত্যবাদীদের মুখপাত্র, আল-আজহারের বিশ্বখ্যাত আলেম, সমকালের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি হলেন- ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলার্স এর প্রধান ড. ইউসুফ আল-কারজাভি। তিনি ছিলেন বর্তমান সময়ের আইকন। তাঁর রচিত গ্রন্থাবলি বহু ভাষায় অনুদিত হয়েছে। পবিত্র মসজিদুল আকসার জন্য তার অন্তর ছিল ব্যাকুল। সব সময় এ মসজিদের বিশেষ অবস্থান ছিল তার অন্তরে। তিনি এ মসজিদের জন্য লড়েছেন আজীবন। ’
গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ড. ইউসুফ আল-কারজাভি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। পরদিন কাতারের গ্র্যান্ড মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দোহার মুসাইমিরাহ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে গতকাল শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আল্লামা ড. ইউসুফ আল-কারজাভির মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি। এর আগে তার মৃত্যুর পর শোক প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান, প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা শানতুব, কাতার আমিরের মাতা মুজা বিনতে নাসির, কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মুহাম্মদ বিন আবদুর রহমান, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লুলুয়াহ আল খাতিরসহ মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ।
আল্লামা ড. ইউসুফ আল-কারজাভির মাধ্যমে ১৯৭৭ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শরিয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ’ অনুষদের যাত্রা শুরু হয় এবং তিনি অনুষদের ডিন মনোনীত হন। একই বছর তিনি ‘সেন্টার অব শারিয়াহ অ্যান্ড সুন্নাহ’ প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৭৭ সালে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর ফাতওয়া অ্যান্ড রিসার্চ’ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ইসলামী শিক্ষা, অর্থনীতি, সামাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ১২০টির বেশি গ্রন্থ রয়েছে।
ইসলামী অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৪১১ হিজরিতে আল্লামা ইউসুফ আল-কারাজাভি ব্যাংক ফয়সল পুরস্কার লাভ করেন। ইসলামী শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ১৪১৩ হিজরিতে কিং ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এবং ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে ‘হাসান বাকলি’ পুরস্কারে ভূষিত করে। এ ছাড়া তিনি অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।
সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির
Discussion about this post