আজ গোধূলি শেষে পাওয়া না পাওয়ার ভিড়ে উত্তেজনা আর শিহরণের জন্য প্রস্তুত হবে সবাই। প্রস্তুত হবে এশিয়ার ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের মহারণে বাংলাদেশকে বরণ করে নিতে। বরণ তো হবেই, ফাঁকেতে চলুন না দেখে আসি অতীতটা। আর ইতিহাসের পাতায় নাম কাদের, কারা গড়ল অপার সব কীর্তিগাঁথা। দল হিসেবেই বাংলাদেশই বা দৌড়াল কতটা..
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মহারণে বাংলাদেশের অধ্যায়টা লেখা বেদনাবিধুর নীল রঙে। স্বপ্নভঙ্গের এই গল্পগুলো লেখা যায় ব্যথাতুর কালো কালিতেও। প্রেমিকার হাত ছুঁতে গিয়েও যেন ছোঁয়া হয়নি, খুব কাছে গিয়েও লাল গোলাপটা আর পাওয়া হয়নি। হারানো দিনের ধূসর কালো মলিন অধ্যায়গুলো বাদ দিলেও এই দশকের গল্পে শেষ চার আসরে তিন- তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা আর আমাদের হয়নি, অশ্রুসিক্ত চোখে শুধুই নির্বাক চাহনি।
শেষ চার আসরের তিনবার, আর শেষ দুই আসরের প্রত্যেকটাবার ফাইনালিস্ট দুই দলের একটা নাম বাংলাদেশ। আশা জাগিয়ে, স্বপ্ন দেখিয়ে, স্বপ্নতেই শেষ। এক দশক আগের সাকিব-মুশফিকের সেই অশ্রুভেজা চোখ এখনো হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়, আফসোসে হতাশায়, এটা কেমন করে হলো, হায়!২০১৬ সালে শেরে বাংলাতে শিহরণ জাগিয়ে যদিও হেরে যাই, তবে ২০১৮ এশিয়া কাপও আক্ষেপে পোড়ায়৷ ‘১২-এর যন্ত্রণায় যেন গুঁড়ো মরিচ ছিটায়।
এশিয়া কাপে ১৪ আসরে ১১ জন টুর্নামেন্ট সেরা দেখেছে বিশ্ব। ২ জন টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন একাধিকবার, অর্জুনা রানাতুঙ্গা আর নভ্যুজিত সিং সিধু তাদের নাম। যাহোক, সুরিন্দর খান্নায় তালিকার শুরু, শিখর ধাওয়ানে সমাপ্তি। মাঝের গল্পে লাল-সবুজের কালিতে দুটি নাম বাংলাদেশের প্রাপ্তি।
বাংলাদেশীর অশ্রুসিক্ত ২০১২ সালের আসরটা ছিল সাকিবময়। ২৩৭ রান ও ৬ উইকেট নিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে নাম লেখান এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মহারণে সর্বসেরা সেনাপতি হিসেবে। অতঃপর ফের ২০১৬ সালে সাব্বির রহমান সেই তালিকায় নাম লিখেন লাল-সবুজের কালিতে। ম্যান অফ দ্য ফাইনাল হবার কীর্তি আছে লিটন দাসের, মুস্তাফিজও তালিকায় আছেন এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের। এক অম্লান কীর্তি আছে তামিম ইকবালের, টানা চার ম্যাচে অর্ধশতক এই ড্যাশিং ওপেনারের।
এত গেল প্রাপ্তি, এবার লজ্জাতে ফিরি। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৮৫ রান পাকিস্তানের, প্রতিপক্ষ আমার দেশ। আবার সব থেকে কম রানে অল আউট হবার লজ্জাটাও আমাদের, ৮৭ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ডাক তথা শূন্য রানের তালিকায়ও আছে দুই বাংলাদেশী, সমান ৪ শূন্য নিয়ে রুবেল হোসেনের সাথে আমিনুল ইসলাম শীর্ষস্থানধারী। ভারতীয়দের ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ শচিনের শততম শতকটাও এই বাংলাদেশেরই বিপক্ষে।
এবারের আসরের আগে ২০১৬ এশিয়া কাপটা হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সেই আসর সেরার পুরস্কার উঠেছিল সাব্বির রহমানের হাতে। সেই আসরে মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করেছিলেন ১২১ এভারেজে, যা অনন্য কীর্তির তালিকাতে। তবে সেই আসরেও এক লজ্জা আছে, লজ্জাটা অধিনায়ক মাশরাফীকে ঘিরে, তিনটি ডাক মেরেছিলেন একই আসরে।
Discussion about this post